শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এখন বিপদ বাড়াবে কিউলেক্স মশা

-ড. কবিরুল বাশার

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখন বিপদ বাড়াবে কিউলেক্স মশা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও মশা গবেষক ড. কবিরুল বাশার বলেছেন, মাঝে মাঝে বৃষ্টির কারণে এখনো এডিস মশার দাপট রয়ে গেছে। তাই ডেঙ্গুতে এখনো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে। নভেম্বরজুড়ে এটা থাকবে। তবে এখন বিপদ বাড়াবে কিউলেক্স মশা। ইতোমধ্যে এই মশা বাড়তে শুরু করেছে এবং শীতে এটা আরও বাড়বে। মশা নির্মূলে এখনই সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই ধরনের মশা নির্মূলে পৃথক কর্মসূচি নিতে হবে। কারণ এডিস মশা জন্মায় স্বচ্ছ পানিতে, কিউলেক্স মশা বংশবিস্তার করে নোংরা, পচা পানিতে। কিন্তু কিউলেক্স মশাকে টার্গেট করতে গিয়ে যেন এডিস মশা বাদ পড়ে না যায়। কারণ ডেঙ্গু এখন আর মৌসুমি রোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বারো মাসই ডেঙ্গু হচ্ছে। আর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের সমন্বিত বাহক ব্যবস্থাপনা বা সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে ৪টি উপাদান রয়েছে। যেমন- পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, জীবজ নিয়ন্ত্রণ, কীটনাশক দ্বারা নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণকে সম্পৃক্তকরণ। আমরা শুধু কীটনাশক দ্বারা নিয়ন্ত্রণেই গুরুত্ব দিচ্ছি। বাকি ৩টি উপাদানকে আমরা ঠিকঠাকভাবে কাজে লাগাতে পারছি না বলে দেশে এডিস মশার বিস্তার কমছে না। উল্টো এ বছর ডেঙ্গু সব রেকর্ড ভেঙেছে। যখন একটি দেশে অনেক বছর ধরে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু থাকে, সেটা খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ওই দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়তেই থাকে। কিউলেক্স মশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শীত আসছে। বৃষ্টিপাত কমে গেছে। অনেক দিন বৃষ্টিপাত না হলে ড্রেন, ডোবা, নর্দমার পানি ঘন হয়ে যায় এবং পানিতে জৈব উপাদানের পরিমাণ বাড়ে। এই জৈব উপাদান কিউলেক্স মশার লার্ভার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই শীতে এ ধরনের পচা পানির উৎস যেখানে থাকে, সেখানে মশা বাড়ে। ঢাকার প্রতিটা খাল, ডোবা, ড্রেন এই মশার প্রজননক্ষেত্র। আর কিউলেক্স মশা প্রায় ২ কিলোমিটার উড়ে রক্ত খাওয়ার জন্য আসতে পারে। ২ কিলোমিটারের মধ্যে যে কোনো জায়গায় ডোবা, নর্দমা, ড্রেন, বিল, ঝিল থাকলে সেখানে এই মশার ঘনত্ব বাড়বে। রাজধানীর চারদিকে নিম্নাঞ্চলগুলোয় মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এ জন্য ডোবা-নালা, খাল ও ঝিলগুলো থেকে কচুরিপানা এবং ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে নিয়মিত ওষুধ দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর