রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কথা কাজে সতর্ক মাঠ প্রশাসন

ওয়াজেদ হীরা

কথা কাজে সতর্ক মাঠ প্রশাসন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা কথা এবং কাজের ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ নিয়ে যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে সেজন্য জেলা-উপজেলার কর্মকর্তারা সতকর্তার সঙ্গে কাজ করছেন। মাঠ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা কর্মকর্তাদের অন্যতম দায়িত্ব। নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। নির্বাচনে পরিবেশ অনুকূলে রাখতে, অপ্রপচার বা বিশৃঙ্খলা রোধ করা, নির্বাচনি আচরণ বিধি মানা, সবার সহাবস্থানসহ সব বিষয় নিয়ে সর্তকতার সঙ্গে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।

নির্বাচন উপলক্ষ্যে মাঠ প্রশাসনকে ইতোমধ্যেই তিনটি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, মাঠ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ প্রশাসনের সব স্তরে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদন করা সবার জাতীয় দায়িত্ব। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করার জন্য চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তফসিল হয়ে গেছে। এখন ইসির নির্দেশনা মেনে কাজ করবে কর্মকর্তারা। মন্ত্রিপরিষদ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আমরা নিয়মিত কার্যক্রম করে যাচ্ছি। বিভাগীয় কমিশনারদের নিয়ে নিয়মিত যে বৈঠক হয় সেখানে সবসময়ই কিছু নির্দেশনা থাকে। এবারের বৈঠকে নির্বাচন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাজার মনিটরিং, খাদ্য মজুদ পরিস্থিতি এসব নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যেন না হয় সে বিষয়ে সকল বিভাগীয় কমিশনারদের  সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা উপজেলা সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও সতর্ক থাকার বার্তা দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিভাগের এক জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের এই পদে থেকে ভূল করা উচিত না। সরকারের রুটিন দায়িত্ব সাবধানতার সাথে পালন করছি। ভূল হলে ইসি যে কেনো সময় দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করার সুপারিশ করবে। চট্টগ্রাম বিভাগের এক ডিসি বলেন, নির্বাচন নিয়ে ইসির নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে আমার জেলার কোনো বদনাম হোক সেটা আমি চাইবো না। একইভাবে সহকারি রিটানিং কর্মকর্তারাও সেরা দায়িত্বটাই পালন করবে। আমাদের কোনো পক্ষ-বিপক্ষ নেই। বরিশাল অঞ্চলের এক ডিসি বলেন, আমাদের মাসিক সভায় সার্বিক বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এখন ইসি থেকে যে নির্দেশনা দেবে, পরিপত্র জারি করবে আমরা তা পালন করছি মাত্র। রাজশাহী বিভাগের এক ইউএনও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বৈরি পরিবেশ দেখিনি, সামনে কেমন হবে সেটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ আছে কি না জানতে চাইলে একই বিভাগের আরেক ইউএনও বলেন, সব সময় নির্বাচনে একটা চ্যালেঞ্জ থাকে, থাকবেই। আমি আমার দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে চাই। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও প্রশাসন অনু বিভাগ) মো. আমিন উল আহসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তফসিলের পর বিভাগীয় কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। এসকল বৈঠকে আমরা তাদের বলেছি ইসি যে নির্দেশনা দিচ্ছে সেটি মেনে কাজ করার। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ বা এ ধরণের প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। সামনের মাসে নির্ধারিত বৈঠক আছে, প্রয়োজনে একাধিক বৈঠক হতে পারে। মাঠ প্রশাসনের নিয়মিত বৈঠকে কর্মকর্তাদের এক গুচ্ছ নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কেউ যেন প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক হয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।

সর্বশেষ খবর