শিরোনাম
রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাতির ভয়ে আগেই কাটা হচ্ছে ধান

শেরপুর প্রতিনিধি

হাতির ভয়ে আগেই কাটা হচ্ছে ধান

শেরপুর জেলার সীমান্ত অঞ্চল মেঘালয় ঘেঁষা শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীতে মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব থামছেই না। এখন আমন ধান পাকছে। আর হাতির অত্যাচার বেড়েই চলছে। পাকা ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে হাতি জনবসতিতে ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী মধুটিলা ইকোপার্কের প্রধান ফটকের সামনে কয়েকটি দোকান ভেঙে আম, তেঁতুল, চালতা ও বরইয়ের আচার খেয়ে সাবাড় করেছে ২০ থেকে ২৫টি বন্যহাতির একটি দল। ক্ষতিসাধন করে ইকোপার্কের মহুয়া রেস্ট হাউসের। মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হাতির দল আর তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। সীমান্তের ওই উপজেলাগুলোতে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও তান্ডব চালাচ্ছে হাতির দল। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে বেশকিছু মানুষ মারা গেছেন। মানুষও আগ্রাসি হয়ে হাতি হত্যা করছে। এ নিয়ে মামলা ও সরকারি ক্ষতিপূরণও চলছে। সরকারের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ বলছে, বৃহৎ এ প্রাণীটি প্রকৃতপক্ষে দৈনিক ১৫০ কেজি খাবার খায়। কিন্তু মানুষের কারণে ওরা খাদ্য সংকটে পড়েছে। কমেছে হাতির বিচরণক্ষেত্র। খাদ্য সংকট ও স্বাভাবিক চলাফেরায় বিপত্তি ঘটায় মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে হাতি। সরকারের এই বিভাগের দাবি, পাহাড়ে বনাঞ্চল উজাড়, হাতির বসতি ধ্বংস, হাতির খাবার সংকট, স্বাভাবিক চলাচলে বাধা, মানুষের নিষ্ঠুরতা, হাতির বসতিতে মানব বসতি গড়ে ওঠা, বনাঞ্চলে সড়ক নির্মাণ ইত্যাদি কারণে এই দ্বন্দ্ব বাড়ছে। শেরপুরের এককালের গভীর বনাঞ্চল এখন অনেকটা আবাসিক, আধুনিক প্রকল্প ও উর্বর চাষবাসের উত্তম ক্ষেত্র হয়ে গেছে। এসবে হাতির বসবাস ও খাবারের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বৈদ্যুতিক আলো আর গাড়ির শব্দ পাহাড়ের প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। হাতির পূর্বপুরুষ যে স্থান দিয়ে চলাফেরা করেছে বংশপরম্পরায় সেই পথ দিয়েই পরবর্তী বংশধর চলাফেরা করে। ওই পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। বন কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম বলেছেন, পাকা ধান হাতির পছন্দের খাবার। এ সময় হাতির দল ধান খেতে আসে। মানুষ ও হাতির এই দ্বন্দ্ব অবসানে এ অঞ্চলে ২২ হাজার একরের অভয়াশ্রমের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই বন কর্মকর্তার দাবি, শেরপুরে যে পরিমাণ বনাঞ্চল তাতে এত সংখ্যক হাতির মুক্ত বিচরণ সম্ভব নয়। এ জন্য পার্শ্ববর্তী ভারতের মেঘালয় ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যে কথা বলে দুই দেশের হাতির বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে হবে।

সর্বশেষ খবর