সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকাই চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে পাঁচটি গ্রেড থেকে একটি কমিয়ে চারটি করেছে সরকার। ৩ এবং ৪ গ্রেড মিলে একটি গ্রেড করা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শ্রমিক-কর্মচারীদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ সংক্রান্ত বোর্ডসভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী। মজুরি বোর্ডের বৈঠকে এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে গেজেট প্রকাশের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় শ্রমিকদের পক্ষে শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি এবং মালিকদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। এ ছাড়াও মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির খসড়া গেজেট হয়েছিল, সেটা নিয়ে মালিক পক্ষ থেকে ১৭৩টি আপত্তি ও সুপারিশ দেয়। আর শ্রমিকদের ২৫টি সংগঠন থেকেও আপত্তি ও সুপারিশ করেছে। আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। মজুরিতে ৫টি গ্রেড ছিল সেখান থেকে কমিয়ে ৪টি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ৪র্থ গ্রেডে সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ ছিল সেটা ঠিক রাখা হয়েছে। ৩য় গ্রেডে ১৩ হাজার ২৫ টাকা থেকে ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা, ২য় গ্রেডে ১৪ হাজার ১৫০ থেকে ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা, প্রথম গ্রেডে ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ১৫ হাজার ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিক নেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত ৭ নভেম্বর মজুরি ঘোষণা করে বোর্ড। এরপর গেজেট করার পর ১৪ দিনের মধ্যে মালিক ও শ্রমিকদের আপত্তি থাকলে জানাতে হয়। সে অনুযায়ী মালিক ও শ্রমিকপক্ষের আপত্তি নিয়ে আলোচনা করেছি। শ্রমিকদের মূল দাবি ছিল গ্রেড কমানো। আমরা সে অনুযায়ী পাঁচটি থেকে কমিয়ে চারটি গ্রেড করেছি। ফলে ৩/৪ গ্রেড মিলে একটি করেছি। আমি মনে করি মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ ও নিরপেক্ষ যে সদস্য রয়েছেন তাদের সম্মতিতে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে যে বেতন বাড়ানো হলো সেটা কি পর্যাপ্ত কিনা জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা রনি বলেন, আমাদের অধিক সংখ্যক শ্রমিক চাকরি করে এক থেকে ৩ নম্বর গ্রেডে। এজন্য সর্বনিম্ন যে গ্রেড সেখানে নতুন যারা কাজে যোগ দেয় তাদের জন্য সেটা হলো ৪র্থ। সেখানে বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া বাকি তিনটি গ্রেডে বেতন শুরু হলো ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা দিয়ে। ৪০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে সাড়ে ৩৯ লাখ শ্রমিক কাজ করে এখানে। আমাদের ৫টি গ্রেডের মধ্যে ৩-৪ গ্রেডকে এক করা হয়েছে। ফলে গ্রেড সংখ্যা কমে ৪টি হয়েছে। শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, শ্রমিকরা কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে। বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে পারবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ মজুরি মন্দের ভালো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট থাকবে। এটা আমাদের একদিক থেকে সফলতা। জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে প্রথম মজুরি বোর্ডে ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ হয় ৯৩০ টাকা। ১২ বছর পরে ২০০৬ সালে ১৬৬২ টাকা, ২০০৯ সালে ৩ হাজার, ২০১৩ সালে ৫ হাজার ৩০০ এবং ২০১৮ সালে বেতন নির্ধারণ করা হয় ৮ হাজার টাকা। এ বছর সর্বোচ্চ মজুরি বাড়ানো হয়েছে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

সর্বশেষ খবর