বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিরাপত্তার অভাব প্রধান কারণ

------- শিরিন হক

নিরাপত্তার অভাব প্রধান কারণ

বাল্যবিয়ে রোধে শুধু আইন করে দিলেই বিষয়টি শেষ হবে না। কেন অভিভাবকরা কম বয়সে সন্তানের বিয়ে দিচ্ছেন এর বিশাল একটি সামাজিক প্রেক্ষাপট আছে। আমি মনে করি, এর প্রধান কারণ নিরাপত্তার অভাব। ‘নারীপক্ষ’-এর সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শিরিন হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। এই নারী নেত্রী বলেন, মেয়েরা  বাড়ি থেকে স্কুলে হেঁটে যাওয়ার পথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে কি ঘটবে না, এ আতঙ্ক তো আছেই, এর সঙ্গে নিজ বাড়িতে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার চেয়ে অভিভাবকরা কন্যাসন্তানের বিয়ে দেওয়াকে নিরাপদ মনে করেন। বাল্যবিয়ের শিকার কন্যাশিশুর অভিভাবকদের মানসিকতা এমনই। সরকার যদি মেয়েদের নিরাপত্তায় প্রাধান্য না দেয়, এ ইস্যুটিকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে না নেয় এবং একে গুরুত্ব দিয়ে প্রচারসহ বিভিন্ন স্তরে পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে বাল্যবিয়ের হার কমবে না, বরং বাড়বে। বাল্যবিয়ের হার যে এখন ঊর্ধ্বমুখী, তাতে আমি মোটেও অবাক হচ্ছি না। শিরিন হক আরও বলেন, মেয়েদের ওপর নির্যাতন বা নিপীড়নের যে আশঙ্কা, তা যদি আমরা নির্মূল করতে না পারি তাহলে বাল্যবিয়ে চলতেই থাকবে। আবার আমাদের ছেলেরা পুরুষ হচ্ছে কিন্তু সত্যিকার মানুষ হিসেবে আমরা তাদের গড়ে তুলতে পারছি না। কারণ শৈশব থেকে ছেলেরা সেই শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠছে না। এ বিষয়ে আমাদের কোনো মনোযোগও নেই। ছেলেদের শিখতে হবে মেয়েদের কীভাবে সম্মান করতে হবে। যে কোনো সম্পর্কে সম্মতি বলে একটা ব্যাপার আছে। সম্মতি ছাড়া কারও ওপর জোরজবরদস্তি যে অপরাধ, এ বিষয়গুলো ছেলেদের শেখাতে হবে। আর এগুলো সেকেন্ডারি স্কুল থেকেই তাদের শেখাতে হবে।

 কিন্তু এ জায়গাটিতে আমি সরকারের দিক থেকে কোনোরকমের উদ্যোগ দেখছি না। ছেলেদের বাদ দিয়ে মেয়েদের সমস্যার সমাধান হবে না এটি বুঝতে হবে। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে দেশের সব ছেলেকে স্কুলে বাধ্যতামূলকভাবে মেয়ে ও নারীদের সম্মান করার একটি মডেলিং চালু করা উচিত। কমিউনিটি পুলিশিংয়ে মেয়েদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দেশে কমিউনিটি পুলিশিং বিষয়টি থাকলেও তা কার্যকর নয়। একে কার্যকর করতে হবে। আর কার্যকরের ক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিরিন হক বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে নারী নেত্রীদেরও দুর্বলতা আছে। এটি প্রতিরোধে আমাদের যে লড়াই করার কথা ছিল তা করছি না। এটি আমাদের এক ধরনের ব্যর্থতা। নারী সংগঠন এবং এ আন্দোলনে সম্পৃক্তদের এ ব্যাপারটিকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর