বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শঙ্কা থেকেই বাল্যবিয়ে

----- এলিনা খান

শঙ্কা থেকেই বাল্যবিয়ে

মেয়েরা তাদের অভিভাবকদের কাছে ‘বোঝা’ নয়। অভিভাবকরা ঠিকভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন না বলেই উঠতি মেয়েদের ক্ষেত্রে ‘বোঝা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। অভিভাবকরাও এখন চান না কন্যাসন্তানের বাল্যবিয়ে হোক। অনিরাপত্তা থেকে কন্যাসন্তান নিয়ে অনেক অভিভাবক শঙ্কায় থাকেন। অর্থাৎ শঙ্কাকেই তারা ‘বোঝা’ মনে  করেন। আর এ শঙ্কা থেকেই অভিভাবকরা কন্যাশিশুর বিয়ে দেন। এজন্য যতক্ষণ পর্যন্ত সমাজ ও পরিবার একটি উঠতি মেয়ের অভিভাবকের শঙ্কা দূর করতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাল্যবিয়ে রোধ করা যাবে না। মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা মেয়েদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে না পারব ততক্ষণ বাল্যবিয়ে রোধ করা যাবে না। আর নিরাপত্তা দুই ধরনের। একটি হচ্ছে অর্থনৈতিক, আরেকটি মেয়েটির নিরাপদে চলাচলের। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকলে অভিভাবকরা যখন মনে করবেন কন্যাসন্তানের বিয়ে না দিলেও চলবে, তখন সেটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। আর যখন অভিভাবকরা আশঙ্কায় থাকেন, মেয়ে বড় হলে তাকে বখাটেরা উত্ত্যক্ত করবে বা মেয়েটিকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় নেবে, তখন অভিভাবকরা মেয়ের বাল্যবিয়ে দিতে চাইবেন।

এলিনা খান বলেন, তবে আইন দিয়ে সবকিছু হয় না। আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। অনেকেই আছেন যারা জন্মনিবন্ধনে শুধু তারিখ ঠিক রেখে সন্তানের জন্মসাল পরিবর্তন করে বিয়ে দেন। এটি রোধে হাসপাতালগুলোয় শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার নাম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে হবে। কোনো শিশুর জন্ম যদি বাড়িতে হয় তাহলে বাধ্যতামূলকভাবে সেই এলাকার চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর দিয়ে তার জন্মনিবন্ধন করাতে হবে। কেউ যদি তার পরও অবৈধভাবে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে কোনো কন্যাশিশুর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে সেই শিশুটির বিয়ে যে কাজি পড়াবেন তাকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর