মুন্সীগঞ্জে একের পর এক ভরাট হচ্ছে খালসহ কৃষিজমি ও ডোবানালা। সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মাখাহাটি ও মহেশপুরে ড্রেজিং করে ভরাট করা হচ্ছে কৃষিজমি ও ডোবানালা; এমনকি সরকারি খাল। আর এসব অবৈধ ড্রেজিংয়ের সঙ্গে জড়িত ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ, আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুদ্দিন মোল্লা ও ড্রেজার মালিক পিন্টু সরকার। এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে কৃষিজমি ও ডোবানালা ভরাট করে আসছে। অবৈধ এ ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের কোনোরূপ পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর ও পূর্ব মাখাহাটি গ্রামে কৃষিজমি, সরকারি খাল ও ডোবানালা ভরাট চালিয়ে আসছেন ড্রেজার মালিক পিন্টু। আর এসব ভরাটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুদ্দিন মোল্লা। ফলে দুই গ্রামের কৃষিজমি, ডোবানালা কমে আসছে, ঝুঁকিতে পড়ছে পরিবেশ। এর আগেও অবৈধ এ ড্রেজার ব্যবসায়ী পিন্টু সরকার পাশের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আলদির বিভিন্ন কৃষিজমি ভরাটকালে ড্রেজার উচ্ছেদ করে উপজেলা প্রশাসন। পরে তিনি মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর ও পূর্ব মাখাহাটি এলাকায় ড্রেজিং করে জমি ভরাটের কাজ শুরু করেন। স্থানীয়রা জানান, ড্রেজিংয়ের সঙ্গে জড়িতরা ক্ষমতাবান হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। তারা যেভাবে খুশি কৃষিজমি, খাল ও ডোবানালা ভরাট করে আসছেন। অবৈধ এ ড্রেজিং বন্ধ করা না গেলে এ ইউনিয়নের কৃষিজমি, ডোবানালা ও সরকারি খাল পড়বে হুমকির মুখে। তাই অতিসত্বর অবৈধ এ ড্রেজারটি আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত বলেও দাবি তাদের। কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি জানিয়ে ও ভরাটের বিষয়টি স্বীকার করে ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হোসেন ‘আমরা কৃষিজমি নয়, ডোবানালা ভরাট করছি। আপনারা পিন্টুর সঙ্গে দেখা করেন, না হলে পরে দেখা কইরেন’ বলে ফোন কেটে দেন। ‘কীসের অনুমোদন? আমরা সব ম্যানেজ করেই ড্রেজিং চালিয়ে আসছি’ এমন দাবি করে ড্রেজার মালিক পিন্টু সরকার বলেন, ‘আপনারা নিউজ করে কী হবে? আমাদের সঙ্গে স্থানীয় নেতারা আছেন; তাদের সঙ্গে কথা বলেন।’ অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফা খান বলেন, ‘কৃষিজমি ও ডোবানালা ভরাটের বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি, খুব দ্রুত অবৈধভাবে জমি ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’