শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্বাচনে হেফাজতের শতাধিক নেতা

নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে হেফাজতে ইসলাম

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন হেফাজতে ইসলামের শতাধিক নেতা। তারা রাজনৈতিক ব্যানার ও স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। এরই মধ্যে তাদের অনেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে- নির্বাচনে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে হেফাজতে ইসলাম। কাউকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়া হবে না।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তবে রাজনৈতিক ব্যানারে কিংবা স্বতন্ত্রভাবে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাতে আপত্তিও করবে না হেফাজতে ইসলাম। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি যার যার ব্যক্তিগত।’ ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা দলীয় ব্যানারেই অংশগ্রহণ করবেন। তবে হেফাজতে ইসলামের সাবেক ও বর্তমান কমিটির কেউ কেউ ইসলামী ঐক্যজোটের ব্যানারে অংশগ্রহণ করছেন। তাই  হেফাজতে ইসলামের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ভোটে আমাদের সমর্থন দেবে।’ জানা যায়, হেফাজতে ইসলামের ২৫৫ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির দেড় শতাধিক নেতাই  সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। হেফাজতে ইসলাম সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিশ এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টিসহ তাদের জোটভুক্ত অনিবন্ধিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলনসহ তাদের জোটভুক্ত অনিবন্ধিত কয়েকটি দলের নেতারা। এ ছাড়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেউ কেউ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে দলীয় ব্যানার এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন শতাধিক বর্তমান ও সাবেক হেফাজতে ইসলামের নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছে হেফাজতে ইসলামের  কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী। তিনি খেলাফত আন্দোলনের আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। এ দলের ব্যানারেই তিনি ঢাকা-২ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন। নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা-৭ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে সদ্য পদত্যাগ করা হেফাজতের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী সুনামগঞ্জ-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ব্যানারে বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন হেফাজতে ইসলামের বর্তমান ও সাবেক ৪০ নেতা। এর মধ্যে ঢাকা-৪ হাজী আবদুল মালেক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, কুমিল্লা-১ মাওলানা সুলতান মুহিউদ্দিন, কুমিল্লা-৮ মাওলানা আবুল ফারাহা আবদুল আজিজ, সিলেট-১ মাওলানা নাসির উদ্দিন, গাইবান্ধা-২ হাফিজুর রহমান সরদার অন্যতম। ইসলামী ঐক্যজোটের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেবেন কমপক্ষে ৬০ নেতা। তাদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও চট্টগ্রাম-৭ আসনে মুফতি ফয়জুল্লাহ, চট্টগ্রাম-২, ৩ এবং ৮ আসন থেকে মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ থেকে মাওলানা আবুল হাসানাত, ঢাকা-৪ থেকে শাহ আলম, ঢাকা-৫ মুফতি কাইয়ুম, ঢাকা-৮ মুফতি জিয়াউল হক মজুমদার, নেত্রকোনা-৩ এহতেশাম সারোয়ার, সিলেট-১ মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, নেত্রকোনা-২ মুফতি ইলিয়াস  হোসেন আরাবী, হবিগঞ্জ-২ মাওলানা হেফজুর রহমান, হবিগঞ্জ-১ মাওলানা মুশতাক আহমদ ফোরকানী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫  মেহেদি হাসান, কক্সবাজার-১ মাওলানা সামছুদ্দিন আফতাব, কক্সবাজার-২ মাওলানা ইউনুচ, কক্সবাজার-৪ মাওলানা ওসমান, চট্টগ্রাম-৫ মাওলানা মির্জা ইয়াছিন আরাফাত, গাজীপুর-১ ফজলুর রহমান অন্যতম।

সর্বশেষ খবর