শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিস্তায় দুর্লভ দাগি রাজহাঁস

নজরুল মৃধা, রংপুর

তিস্তায় দুর্লভ দাগি রাজহাঁস

রংপুরের তিস্তা নদীতে দেখা মিলছে দুর্লভ দাগি রাজহাঁসের। শীতের শুরুতে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এদেশে এসেছে পরিযায়ী এই দাগি রাজহাঁস। এই পাখিটি সচরাচর দেখা যায় না।

জানা গেছে, শীতের সময় এই পাখিগুলো মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিযায়ী হয়ে আসে। বসন্তকালে আবার নিজ গন্তব্যে চলে যায়। সেখানকার পার্বত্যাঞ্চলে, জলাশয়ে বিচরণ ও প্রজনন করে। এ জন্য তাদের ৭ হাজার মিটার উঁচু হিমালয় অতিক্রম করতে হয়। আট ঘণ্টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত হিমালয় পার হতে পারে তারা অনায়াসে। প্রায় ২০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এদের আবাস হলেও বিগত কয়েক দশক ধরে সংখ্যা ক্রমেই কমছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। দাগি রাজহাঁসের অন্য কোনো উপপ্রজাতি নেই। অনেক উঁচু দিয়ে উড়তে পারে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ উড্ডয়নকারী পাখিদের মধ্যে একটি।

দাগি রাজহাঁস বড় আকারের জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৭৩ সেন্টিমিটার ডানা ৪৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৫ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, লেজ ১৪ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার, পা ৭ দশমিক ১ সেন্টিমিটার এবং ওজন দেড় কেজি থেকে সাড়ে ৩ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক পাখি দেখতে ধূসর। সাদা মাথা থেকে সাদা একটি লাইন ধূসর গলার নিচ পর্যন্ত চলে গেছে। মাথায় দুটি স্পষ্ট কালো ডোরা থাকে। ওড়ার সময় এদের সাদা মাথা, ফিকে দেহ ও ডানার কালো আগা স্পষ্ট চোখে পড়ে। এদের চোখ বাদামি। ঠোঁট হলুদ এবং ঠোঁটের আগা ও নাক কালো। পা ও পায়ের পাতা গাঢ় হলুদ। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের চেহারা প্রায় একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথায় ডোরা নেই। কপাল, গাল ও গলা মলিন। মাথার চাঁদি ধূসর-বাদামি। পিঠ ও পেটের রং একই রকম। কাক, দাঁড়কাক, শিয়াল, গাঙচিল, ঈগল এদের প্রধান শত্রু। পাখিটির ছবি তোলার কারিগর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এই পাখিটির ছবি চার দিন আগে রংপুরের তিস্তা নদী থেকে তুলেছি। দুর্লভ এই প্রজাতির পাখিটি সহজে বাংলাদেশে দেখা যায় না।

এই পাখি হিমালয় পর্র্বতের মতো উচ্চতা সহজেই পাড়ি দিতে পারে। গবেষকদের মতে এই পাখির রক্তের লোহিতকণিকা কিছুটা ভিন্ন ধরনের। অক্সিজেন শক্ত করে ধরে রাখতে পারে। ফলে অনেক উঁচুতে এরা সহজে উড়তে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর