শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

৩০ বছর পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না আরিফের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯৯৩ সালে রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আরিফ ওরফে সরিফুল ইসলামকে (৫২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে পলাতক থাকা আরিফকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, ১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই কেরানীগঞ্জের মালোপাড়া বারিশুর বাজারে একটি মুদি দোকানে বাবা-ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৪ সালের ২১ জুলাই আদালত আরিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ২০০৮ সালে হাই কোর্ট পুনর্বিচারের জন্য মামলাটি নিম্ন আদালতে পাঠান। নিম্ন আদালত সব বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আরিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। রায় ঘোষণার সময় আরিফ ও মাসুদ পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শরিফ কেরানীগঞ্জের মালোপাড়া বারিশুর বাজারে মুদিপণ্যের ব্যবসা করতেন। গুদারাঘাট সংলগ্ন দোকান হওয়ায় শরিফ প্রায় সময়ই মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাবেচা করতেন। তার দুই ছেলে খোকন (তৎকালীন বয়স ৯) ও শাহজাহান (তৎকালীন বয়স ১২) নিয়মিত শরিফের জন্য রাতের খাবার বাসা থেকে নিয়ে আসত। তারা বাবার সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে পড়াশোনা করে দোকানেই ঘুমিয়ে পড়ত। ঘটনার দিন শরিফ কেনাবেচা শেষ করে দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময় দোকানের পেছনের অংশে তার দুই ছেলে ঘুমাচ্ছিল। তখন শরিফের দোকানে আরিফ এবং তার সহযোগীরা এসে সিগারেট ও অন্যান্য মালামাল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিলে বাগবিতণ্ডা হয়। পরবর্তী সময়ে আরিফ ও তার সহযোগীরা দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে শরিফুল বাধা দেয়। এ সময় আরিফ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেশি অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। চিৎকার শুনে দোকানের পেছনের অংশে ঘুমিয়ে থাকা তার দুই সন্তান বাবাকে বাঁচাতে আরিফ ও তার সহযোগীদের হাতে-পায়ে ধরে আকুতি-মিনতি করতে থাকে। কিন্তু তারা শরিফের দুই সন্তানকেও দেশি অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তখন তিনজনই মারা গেছে ভেবে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পর দিন ভোরে স্থানীয়রা শরিফের দোকান খোলা দেখে সেখানে আসে এবং দোকানের ভিতরে তিনটি নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে। ঘটনার পর আরিফ বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।

তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এসে নাম ও পরিচয় গোপন করে সরিফুল ইসলাম নামে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ঢেউটিন ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর