সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ভারতে চার বিধান সভা নির্বাচনের ফল

তিন রাজ্যে বিজেপি জয়ী কংগ্রেস এক রাজ্যে

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে হিন্দিভাষী মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে বিজয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। আর দক্ষিণ ভারতের তেলেগুভাষী তেলেঙ্গানায় বিজয়ী হয়েছে কংগ্রেস। গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয় এবং বিকালে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এ রাজ্যগুলোতে ভোট পর্ব চলেছে।

গতকালের ফলাফল অনুযায়ী, বিধানসভা ভোটে শাসক বিজেপি তিন রাজ্যে জয়ী হয়েছে। রাজস্থানে কংগ্রেসের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। তেমনি কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড়ে বিজেপি চমক সৃষ্টি করে জয়ী হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সরকার পুনরায় বিপুল ভোটে বিরোধী কংগ্রেস দলকে পরাস্ত করেছে। রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস দল তেলেঙ্গানায় দুবারের শাসক আঞ্চলিক দল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পার্টিকে পরাস্ত করে বিজয়ী হয়েছে। এ চারটি বাদে মিজোরাম রাজ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা আজ শুরু হবে।

প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশের ২৩০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি জয়ী হচ্ছে ১৬৪ আসনে। কংগ্রেস পেয়েছে ৬৪টি আসন। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি পুনরায় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজসিং চৌহানকে মনোনীত করে, তাহলে তিনি হবেন পঞ্চমবারের মুখ্যমন্ত্রী। রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী এশোক গেহলটের নেতৃত্বাধীন জাতীয় কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৭০টি আসন। বিধানসভার ২০০ আসনের মধ্যে বিজেপি ১১৫টি আসন পেয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে। ছত্তিশগড়ে বিধানসভার মোট ৯০টি আসনের মধ্যে বিজেপি রেকর্ড সংখ্যক ৫৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তেলেঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনের মধ্যে জাতীয় কংগ্রেস হায়দরাবাদের ক্ষমতায় বসবে ৬৫টি আসন পেয়ে। এখানে শাসক বিআরএস (ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পার্টি) ৪০টি আসন পেয়েছে। তবে বিজেপি মাত্র ৮টি আসন পেয়েছে। তেলেঙ্গানা রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা জয়ের জন্য সোনিয়া গান্ধীকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। কেননা, তাঁর উদ্যোগেই অন্ধ্ররাজ্য দ্বিখন্ডিত করে পৃথক তেলেগা রাজ্য গঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরপর দুবার কে সি চন্দ্রশেখর বিআরএসের মুখ্যমন্ত্রী হন। এদিকে মিজোরামে ভোটের ফলাফল ঘোষণা হবে আজ সোমবার। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোট গণনা। ৪০ বিধানসভার আসনবিশিষ্ট এই রাজ্যটিতে গত ৭ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটিতে ক্ষমতায় রয়েছে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)। যদিও বিভিন্ন এক্সিট পোলের জরিপে দেখা গেছে, এবার এমএনএফকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে ছয় দলের জোট- জোরাম পিপলস মুভমেন্ট (জেপিএম)। উল্লেখ্য, আগামী বছর (এপ্রিল-মে সম্ভাব্য) ভারতের লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বিভিন্ন দলের কাছেই এই নির্বাচন ছিল কার্যত অ্যাসিড টেস্ট। সেদিক থেকে এ নির্বাচনি ফলাফল বিজেপির কাছে যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

এদিকে তিনটি রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা উৎসবে মেতে উঠেছেন। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি কার্যালয়ে অকাল হোলির চেহারা নেয়। তিন রাজ্যে বিধানসভার জয়ের ইঙ্গিত আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’, জাদুকর হিসেবে উল্লেখ করে অভিনন্দন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। যদিও তৃণমূলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

 

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর