বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হঠাৎ চাইলেই সমাজ পরিবর্তন করা যায় না

---------- শেখ ইকরামুল কবীর

হঠাৎ চাইলেই সমাজ পরিবর্তন করা যায় না

জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবীর বলেছেন, কারিকুলাম নাকি আনা হয়েছে উন্নত বিশ্ব থেকে। কিন্তু উন্নত বিশ্বের মতো শিক্ষার হার, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনতা তো আমাদের দেশে নেই। পরিবর্তন সমাজে এমনভাবে হতে হয় যেন সমাজ সেটি গ্রহণ করতে পারে। হঠাৎ করে চাইলেই তো সমাজ পরিবর্তন হবে না। আমাদের কারিকুলাম বাস্তবায়নের অবস্থা হয়েছে এমনই। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের যেভাবে শেখানো দরকার সেই উপকরণ, শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা তো আমাদের নেই। ছাত্রদের শেখানোর আগে শিখতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষকদের মাইন্ডসেট যতক্ষণ পর্যন্ত ঠিক না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারবেন না। কিন্তু শিক্ষকদের তৈরি না করেই শেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার দরকার নেই। এমন হলে প্রকৃত শিক্ষা হয় না। এ শিক্ষাবিদ বলেন, অভিভাবকরাও নতুন কারিকুলামের সঙ্গে অভ্যস্ত নয়। তারা চায় ক্লাসে গিয়ে ভালো পরিবেশে সন্তানরা শিখবে। ক্লাসে গিয়ে যদি কৃষিকাজ বা বাসাবাড়ির কাজ শিখতে হয় তাহলে তো অভিভাবকরা বলবেই স্কুলে না গিয়ে বরং সন্তান খেতেই কৃষিকাজ করুক। তাই এই কারিকুলাম এ মুহূর্তে ফলপ্রসূ হবে না। উন্নত দেশের মতো পরিবেশ, শিক্ষার হার, সচেতনতা এ দেশে নেই। স্কটল্যান্ডে গিয়ে দেখেছি তাদের শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৩। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র কি এমন? উন্নত দেশের সবকিছু তো এ দেশে কাজ করবে না। বলা হচ্ছে, চাকরির পরীক্ষা নয় বরং দক্ষতা দিয়ে চাকরি পাবে তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আসলেই যদি পরীক্ষা না দিয়ে দক্ষতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ থাকে তবে যাদের চাকরি পাওয়ার কথা তাদের কেউই চাকরি পাবে না। যাদের দক্ষতা থাকবে না তারাই অনিয়ম, দুর্নীতি, আর্থিক লেনদেনের আশ্রয় নিয়ে চাকরি পাবে। আমি মনে করি নতুন কারিকুলাম স্থগিত করে শিক্ষকদের অধিকতর প্রশিক্ষণ দিয়ে এর উপযোগী করা উচিত। একই সঙ্গে সমাজ যেন নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এ জন্য সমাজকেও প্রস্তুত করা উচিত। এরপর নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা উচিত।

সর্বশেষ খবর