বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
থামছে না বর্বরতা

মেয়ের সঙ্গে প্রেম পায়ের রগ কর্তন

নড়াইল প্রতিনিধি

মেয়ের সঙ্গে প্রেম পায়ের রগ কর্তন

নড়াইলে স্কুল শিক্ষিকার মেয়ের সঙ্গে প্রেম করার অপরাধে এসএসসি পরীক্ষার্থীর পায়ের রগ কেটে দিল প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। এসএসসি পরীক্ষার্থী আরিয়ানকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাকে যশোরের বেসরকারি একটি পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরিয়ান মহিষখোলা এলাকার মোহাম্মদ মোল্যার ছেলে। সে নড়াইল পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। এ ঘটনায় বুধবার বিকাল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি বা কেউ আটকও হয়নি। আহত আরিয়ান জানান, গত মঙ্গলবার বিকালে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম পলাশ বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করেন এবং আমার আব্বার সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। কিছু সময় পর দক্ষিণ নড়াইল এলাকার ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত তুষার শেখ (৩৫) ও রয়েল মোল্যা (৩০) এসে আমাকে জোরপূর্বক একটি প্রাইভেট কারে ওঠায়। গাড়ির মধ্যে আরও দুজন নারী ছিল। নড়াইল পুলিশ লাইনসের সামনে ওই দুই নারী নেমে যায়। পরে আমাকে কাড়ার বিলে একটি মাছের ঘেরে নিয়ে যায় তুষার, রয়েল ও এলান হাতেপায়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। এতে আমার ডান পায়ের রগ কেটে গেছে। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও রক্ষা পাইনি। পরে আহত অবস্থায় ভ্যানে করে একা সদর হাসপাতালে পৌঁছাই। তবে আরিয়ান ওই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে বলেছে, ওই মেয়ে আমাকে পছন্দ করত। গত দেড় মাস ধরে সে প্রতিদিন আমার বাসার সামনে এসে ডাকাডাকি করত। আমি তাতে সাড়া দিতাম না। বিষয়টি ওই পাড়ার অনেকেই জানে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহরের আলাদাতপুর এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরীর সঙ্গে আরিয়ানের সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আরিয়ানের পরিবারের চেয়ে ওই কিশোরীর আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা বেশি থাকায় বিষয়টি কিশোরীর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ভালোভাবে নেয়নি। এ কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ওই কিশোরীর মা নড়াইল শিবশংকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আরিয়ানের বাড়িতে কয়েকবার গেলেও তার বাবাকে পাওয়া যায়নি, তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না বলে জানিয়েছে পরিবার। আরিয়ানের পায়ের রগ কেটে গেছে কি না এ বিষয় জানতে আরিয়ানকে চিকিৎসা দেওয়া সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ সারথী রায় কোনো কথা বলতে রাজি না হলেও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল গাফফার বলেন, ছেলেটির ডান পায়ের রগ কাটা হয়েছে। নড়াইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক বলেন, এভাবে দিনদুপুরে একটা ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত থাকুক, দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এস এম পলাশ বলেন, আমাকে আরিয়ানের বাবা এ বিষয়টি মেটানোর জন্য বলেছিল, সেই কথা বলতে আমি তাদের বাসায় গিয়েছিলাম। আমি চলে আসার পরে কী ঘটেছে জানি না। সদর থানার ওসি ওবাইদুর রহমান বলেন, প্রেমঘটিত কারণে ছেলেটিকে মারা হয়েছে। ঘটনাটি জানার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে একাধিক টিম অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। অভিযুক্ত যেই হোক, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো এজাহার দেওয়া হয়নি।

সর্বশেষ খবর