শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ ভাগ কমাতে হবে

কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ ভাগ কমাতে হবে

কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন।

গতকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৮) বিজ্ঞানীরা এসব কথা বলেন। তারা জীবাশ্ম জ্বালানি বিজ্ঞানভিত্তিক হ্রাস করার পরিকল্পনার কথাও বলেন।

দুবাইয়ের এক্সপো সিটিতে গতকাল সপ্তম দিন আলোচনা শুরুর পর বিজ্ঞানীরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে রেকর্ড কার্বন নির্গমনের নতুন রিপোর্ট দিয়ে সতর্ক করে দেন। শুধু তাই নয়, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ২০২৩ সালে কার্বন নির্গমন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। তারা জানান, কার্বন নির্গমন পরিস্থিতি উন্নতির পরিবর্তে গত দুই বছরে আরও অবনতি হয়েছে। এই নির্গমনের পরিমাণ এ বছর ৪০ দশমিক ৯ গিগা টনে গিয়ে পৌঁছাবে।

এদিন ক্লাব অব রোমের ৭৫ জন বিজ্ঞানী কপ নেতাদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দেন। তারা কপ প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানান। খোলা চিঠিতে তারা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ও বিজ্ঞান একে অপরের পরিপূরক। প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। ২০৫০ সালের মধ্যে শুধু শূন্য কার্বন নির্গমন নিশ্চিত করলেই হবে না। বরং ওই সময় পর্যন্ত বিশ্বে যে কার্বন ডাইঅক্সাইড থাকবে তা শোষণ করার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।

জীবাশ্ম জ্বালানির বিষয়ে এসব রিপোর্ট পরিবেশবাদীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। তারা দিনভর জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্রের ভেতরে নানা স্লোগানে প্রতিবাদ জানিয়ে জলবাযু সম্মেলনের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক করে দেন। তাদের দাবি, এবারের জলবায়ু সম্মেলনেই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

পাঁচ দিনে ৮৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ : গতকাল এক ব্রিফিংয়ে কপ২৮ প্রেসিডেন্ট ড. সুলতান আল জাবের জানান, চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের পাঁচ দিনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডের জন্য প্রতিশ্রুত অর্থের মধ্যে ৮৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি জমা হয়েছে। তিনি বলেন, এই পাঁচ দিনে ১১টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রতিশ্রুত অর্থ আদায় হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এ কাজগুলো নতুন যুগ রচনা করবে। চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রথম ঘোষণা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণকারী শিল্পগুলোকে ডিকার্বোনাইজ করার উদ্যোগ।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দাবি : কোনো প্রকার দূষণ না করেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মালদ্বীপসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। এবারের সম্মেলনে শুরু হওয়া লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মালদ্বীপের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও জ্বালানিমন্ত্রী তরিক ইব্রাহিম। দুবাইয়ে এক্সপো সিটিতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের সপ্তম দিনে একটি সাইড লাইন ইভেন্টে তিনি এ দাবি জানান।

গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ : সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে ইনোভেশন ইন ডেভেলপিং ফাইন্যান্স ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। লোকাল লিড অ্যাডাপটেশন (এলএলএ) ক্যাটাগরিতে এ চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের বাস্তবায়ন করা স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প। প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), সুইডেন, ডেনমার্ক, জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার রেসিলিয়েন্স হাবে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন ও সহনশীলতা বিনির্মাণে বাংলাদেশের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য জানিয়েছেন কপ২৮ সম্মেলন কেন্দ্রে থাকা বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর