শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সমস্যার মূলে হাত না দিয়ে সমস্যা বাড়ানো হয়েছে

----- কামরুল হাসান

সমস্যার মূলে হাত না দিয়ে সমস্যা বাড়ানো হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেছেন, নতুন কারিকুলাম কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এটি বাস্তবসম্মত কোনো কারিকুলাম নয়। এ ছাড়া সমস্যা কারিকুলাম নিয়ে নয়, মূল সমস্যা হলো দেশের বিদ্যালয়গুলোতে ভালো, দক্ষ শিক্ষক নেই। মূল সমস্যায় হাত না দিয়ে এখন নতুন কারিকুলামের মোড়ক লাগানো হলো। আসলে সমস্যার মূলে হাত না দিয়ে সমস্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ অধ্যাপক বলেন, আমরা ভালো মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারিনি। এদেশে শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয় না, ভালো বেতন দেওয়া হয় না, এই পেশাকে আন্তর্জাতিকমানের করা হয়নি। সমস্যা হচ্ছে সরকার ভালো মানের কোনো বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। রাজধানীতে ভালো মানের সরকারি কোনো স্কুল নেই। যেগুলোকে ভালো বলা হয় সবই মিশনারি স্কুল। এগুলো বাদ দিলে বেশিরভাগেই শিক্ষার মান তলানিতে।

হঠাৎ করে নতুন কারিকুলাম কেন প্রণয়ন করা হলো? আগের কারিকুলামের সমস্যা কী ছিল? কার পরামর্শে, কার দাবিতে এই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হলো অজানা।

তিনি বলেন, এই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করবেন তো শিক্ষকরাই। দেশের গ্রামাঞ্চলের কোনো স্কুলে শিক্ষকদের তো ঘাড়ে দুই মাথা নেই যে তারা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের সন্তানকে খারাপ নম্বর দিতে পারবেন। এদেশে শিক্ষকদের নানাভাবে অপমান অপদস্থ করা হয়, কোথাও কোথাও নকল করতে না দিলে শিক্ষকদের পেটানো হয়। এখন শুনছি শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া যায় না। এই কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট নির্ভরতা বাড়িয়েছে, অভিভাবকদের ব্যয় বাড়িয়েছে।

এ শিক্ষাবিদ বলেন, বিভাগ উঠিয়ে দেওয়ার নামে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলা হলো। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে প্রতি শ্রেণিতেই এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নামক বিষয়ের সংযুক্তি করা হয়েছে। একজন শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান শেখানোর আগে কীভাবে আমরা প্রযুক্তি বিদ্যা দেই। তার মতে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই কারিকুলাম চলমান রাখা যেতে পারে। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ওপরের শ্রেণিগুলোতে এই কারিকুলাম কার্যকর করা কোনোভাবেই উচিত হবে না।

সর্বশেষ খবর