শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

চাকরি জীবনের সবকিছুই ভুয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ১৯ বছর ধরে পশ্চিমাঞ্চল রেলে এমএলএসএস পদে চাকরি করছেন খন্দকার আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী দফতরে তিনি কর্মরত। ২০০৪ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি চাকরিটি বাগিয়ে নেন। সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে এমএলএসএস পদের কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হলেও খন্দকার আনোয়ার হোসেনকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তৎকালীন সিনিয়র ওয়েলফেয়ার অফিসার শেখ কামাল চাকরিটা পাইয়ে দেন। রেলওয়ের দফতর থেকে পাওয়া কাগজপত্রে দেখা যায়, খন্দকার আনোয়ার হোসেন এমএলএসএস পদের জন্য রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২০০৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ৫০ টাকার বিনিময়ে আবেদন ফরম ক্রয় করেন। জমা দেন ৯ সেপ্টেম্বর। কাগজপত্রে আরও দেখা যায়, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার দুই দিন পরে অর্থাৎ ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ব্যাংক ড্রাফট, ১০ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত চারিত্রিক সনদ ও ১২ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত নাগরিক সনদপত্র জমা দিয়েছেন, যা আবেদনের পরে সংগ্রহ করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলের চিফ পার্সোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরের তারিখে কোনো কাগজপত্র আবেদনপত্রে সংযুক্তি সম্ভব নয়। যদি তা হয়ে থাকে, সেটি জালিয়াতি। খন্দকার আনোয়ার হোসেনের অফার লেটারে (নিয়োগপত্র) দেখা যায়, আবেদনের মাত্র তিন মাসের মধ্যে তিনি নিয়োগ পান। এখানে জালিয়াতির বিষয়টি আরও স্পষ্ট। রেলের নিয়োগের আবেদনপত্র জমাদানের পরে ৬৪ জেলার আবেদন আলাদা করা হয়। এর পর চলে আবেদনপত্র ও সংযুক্তি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই। এর পরে আবেদন এন্ট্রি, নির্বাচন পরীক্ষার কার্ড ইস্যু ও কার্ড প্রদান, ফলাফল প্রকাশ, উত্তীর্ণদের ডাক্তারি পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর চূড়ান্ত নিয়োগ। ধাপগুলো পার হতে ৮ থেকে ১২ মাসের বেশি সময় লাগলেও খন্দকার আনোয়ার হোসেন মাত্র তিন মাসেই নিয়োগ পান। তিনি ৯ সেপ্টেম্বর আবেদন করে নিয়োগপত্র পান ১৯ ডিসেম্বর। যোগদান করেন ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি। খন্দকার আনোয়ার হোসেনকে (০১৭১২৩৩৬৭৯৯) একাধিকবার কল করা হলেও রং নম্বর (wrong number) বলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর