সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

তৃতীয়বারের মতো ভোটের লড়াইয়ে জাফরউল্লাহ-নিক্সন

ভাঙ্গা প্রতিনিধি

তৃতীয়বারের মতো ভোটের লড়াইয়ে জাফরউল্লাহ-নিক্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাফরউল্লাহ ও তরুণ রাজনীতিবিদ নিক্সন চৌধুরীর  ভোটের লড়াইয়ের আগে চলছে কথার লড়াই। তাদের বাগ্যুদ্ধে এর মধ্যেই জমে উঠেছে ফরিদপুর-৪ আসনের নির্বাচন ময়দান। তারা একে অপরের কঠোর সমালোচনা করে চলছেন বিভিন্ন সভা সমাবেশে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তৃণমূলের রাজনীতি। এবারও দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে নিক্সন চৌধুরীর অনেক সমর্থক ডিগবাজি খেয়ে পক্ষ বদল করে জাফরউল্লাহর সমর্থনে মাঠে নেমে পড়েছেন। এ নিয়ে গত কিছুদিন দুই পক্ষের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও চলছে কথামালার লড়াই। ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার মোট ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন। এ আসনে সাধারণ মানুষের আলোচনার বিষয় একটাই জাফরউল্লাহ ও নিক্সন চৌধুরী। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও এলাকার হাটে, মাঠে, ঘাটে সর্বত্র একই আলোচনা। ফরিদপুর-৪ আসনের বর্তমান এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে একাদশ সংসদের এমপি হয়েছিলেন। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে তিনি এবার প্রথম বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। তবে তাতে তিনি দমে যাননি। এবারও তিনি তৃতীয় বারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন নির্বাচনে। এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক এমপি কাজী জাফরউল্লাহ। এই আসনে ছয় প্রার্থী থাকলেও আলোচনার  কেন্দ্রে আছেন আওয়ামী লীগ ও যুব লীগের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য। স্বাধীনতার পর ১১ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় সাতবার সংসদ নির্বাচনে দুটি করে আসন ছিল। ১৯৭৯, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই তিন উপজেলা নিয়ে একটি আসন ফরিদপুর-৪। বাকি সাতবারের নির্বাচনে সদরপুর-চরভদ্রাসন নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন, ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৫ আসন। এ তিন উপজেলায় স্বাধীনতার পর কখনো একটি আসন, কখনো দুটি আসন হওয়ায় ১১ বারের নির্বাচনে ১৮ জন এমপি হয়েছেন। এর মধ্যে নয়জন আওয়ামী লীগের, চারজন জাতীয় পার্টির, দুজন বিএনপির, তিনজন স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ১০ম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাজী জাফরউল্লাহকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচন সামনে রেখে প্রাক নির্বাচনি সভা সমাবেশে কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, আগামী নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হলে এলাকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। এলাকার গরির দুঃখী মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য মায়ের নামে একটি আধুনিক মানের হাসপাতাল তৈরি করার ঘোষণাও দেন। এ ছাড়া এলাকার উন্নয়নে তিনি নিজের বাবা কাজী মাহবুব উল্লাহর অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমার বাবা এ এলাকার মানুষের জীবন মানের সত্যিকার উন্নয়নের জন্যই ১৯৬৫ সালে একটি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। একই সঙ্গে এলাকার উন্নয়নে নিজের চাচা সাবেক এমপি ডা. কাজী আবু ইউসুফ, সহধর্মিণী সাবেক এমপি নিলুফার জাফরউল্লাহর ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। বর্তমান এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বিভিন্ন উঠান বৈঠকে, প্রাক নির্বাচনি সভা সমাবেশে এমপি হিসেবে ১০ বছর রাস্তা ঘাটসহ এলাকার উন্নয়নে নিজের অবদান মূল্যায়ন করার জন্য ‘উন্নয়ন ও মূল্যায়ন’ স্লোগান তুলে ধরে ভোট চাইছেন। তিনি করোনাকালীন সময়ে বৃদ্ধা মা ও শিশু সন্তান রেখে এলাকার মানুষের পাশে ছিলেন বলে সভাগুলোতে তুলে ধরেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর