সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

লতিফকে রুখে দিতে চায় তৃণমূল, আলোচনায় মনজুর

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

লতিফকে রুখে দিতে চায় তৃণমূল, আলোচনায় মনজুর

চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এম এ লতিফকে ‘রুখে দিতে’ জোরেশোরে মাঠে নেমেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। নগর আওয়ামী লীগ নেতারাও তৃণমূলকে সমর্থন দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে সক্রিয় হচ্ছেন। অন্যদিকে পাশের চট্টগ্রাম-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সাবেক মেয়র মনজুর আলম। আওয়ামী ঘরানার মনজুরের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে যাচ্ছেন। জানা গেছে, চট্টগ্রামের একাধিক আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও চট্টগ্রাম-১০ ও ১১ আসন নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলীয় প্রার্থী লতিফকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা। ওয়ার্ড ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা পরিবর্তনের জন্য কেন্দ্রে আবেদন জানিয়েছে। নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এদিকে সুমনের সমর্থনে একাধিক মতবিনিময় সভায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতাদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া নির্বাচনি এলাকার ১০টি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকদের অনেকেই সুমনের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন বলেন, ‘উনার (লতিফ) সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। উনি উড়ে এসে এমপি হয়েছেন। এমপি হওয়ার পর এখানকার রাজনীতি নষ্ট করেছেন। মাননীয় সভানেত্রীর ঘোষণার পর এখানকার নেতা-কর্মীদের চাপে আমি প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে জনপ্রিয় সুজন প্রকাশ্যে লতিফ ছাড়া যে কাউকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সুজন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমার কোনো বক্তব্য নেই, সবাই যোগ্য। কিন্তু উনার (লতিফ) কর্মকাে  সবাই ক্ষোভে ফুঁসছেন। উনি জামায়াতের সংগঠনের সংবর্ধনা নিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করেছেন। উনি তো আওয়ামী লীগের কেউ নন। উনি ছাড়া যে কাউকে সমর্থন দিতে আমার সমস্যা নেই।’ এ প্রসঙ্গে এম এ লতিফ বলেন, ‘এটা রাজনীতির অংশ। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। আলোচনা-সমালোচনা থাকবে। এটাই রাজনীতির সৌন্দর্য। এদিকে মাত্র তিন মাস আগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে প্রথমবার এমপি হন মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এ আসনে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সাবেক চসিক মেয়র মনজুর আলম। এ আসনে মনজুর ও তার পরিবারের ভালো অবস্থান রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে ওই নির্বাচনে অংশ নেননি মনজুর। সে সময় থেকে আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান তিনি। সবকিছু মিলিয়ে এই সংসদীয় আসনে মনজুরের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। ফলে জেতার জন্য বাচ্চুকে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। জানতে চাইলে মেয়র মনজুর আলম বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক মাঠে আছি। যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তাই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। আরও ঘনিষ্ঠভাবে সেবার করার জন্য মানুষের পাশে থাকতে  চাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর