বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলিলের ভাবনা, দল তো প্রার্থী বানিয়ে দিল খরচার টাকা কই!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

জলিলের ভাবনা, দল তো প্রার্থী বানিয়ে দিল খরচার টাকা কই!

সখীপুর উপজেলার বৈলারপুর গ্রামের আবদুল জলিল ভাবছেন, ‘দল তো আমায় প্রার্থী বানিয়ে দিল, নির্বাচনের খরচা কই! কে দেবে সেই টাকা?’ টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে জাকের পার্টি আবদুল জলিলকে মনোনয়ন দিয়েছে। অথচ তিনি মনোনয়নের জন্য আবেদন করেননি। জলিল পেশায় মাছ বিক্রেতা। দুই উপজেলায় প্রচার চালাতে তার কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন। ব্যাংকে আছে মাত্র ২ হাজার টাকা। খরচ চালাবেন কীভাবে, দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন তিনি। সখীপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান জানান, টাঙ্গাইল-৮ আসনে সাতটি রাজনৈতিক দলের সাত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যাচাইবাছাইয়ে সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। প্রার্থীরা হচ্ছেন বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), অনুপম শাজাহান জয় (আওয়ামী লীগ), রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টি), পারুল আক্তার (তৃণমূল বিএনপি), আবুল হাশেম (বিকল্পধারা বাংলাদেশ), আবদুল জলিল (জাকের পার্টি) ও মোস্তফা কামাল (বাংলাদেশ কংগ্রেস)। নির্বাচনি বিধি অনুসারে একজন প্রার্থী নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। আবদুল জলিল নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ব্যয়ের খাতেও একই অঙ্ক উল্লেখ করেছেন। ফলে তার হাতে কোনো নগদ টাকা নেই। কীভাবে নির্বাচনের খরচ চালাবেন- জানতে চাইলে আবদুল জলিল বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার করব। আমার একটি পুকুর আছে। পুকুরের মাছ বিক্রি করলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এ আড়াই লাখ টাকা দিয়েই নির্বাচন চালাতে হবে।’ এ অল্প টাকায় নির্বাচন শেষ করা তার জন্য খুবই কষ্টের হবে। দল তো কোনো অর্থ সহায়তা করবে না। সেজন্য তিনি দ্ুিশ্চন্তায় পড়েছেন। আবদুল জলিল বলেন, ‘লিখতে পড়তে জানি না। শুধু নাম দস্তখত করতে পারি। শুনেছি অনেক অশিক্ষিত লোকও জনগণের ভোটে এমপি হয়েছেন। জনগণ ভোট দিলে এমপি হওয়া অসম্ভব কিছু না। সব আল্লাহর ইচ্ছা। এমপি হলে কোনো টাকাপয়সা মেরে খাব না। শুধু মানুষের কল্যাণে কাজ করব।’ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনেকে ৫০ বছর রাজনীতি করেও দলীয় মনোনয়ন পাননি। আর আমি চাওয়ার আগেই পেয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি অবশ্যই বিপুল ভোটে জিতব।’ সখীপুর উপজেলার বৈলারপুর গ্রামের বিএনপির সাবেক নেতা শরিফ পাপ্পু বলেন, ‘প্রায় ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছি, এমপি তো দূরের কথা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করার সাহস পাই না। জলিলের বাবা ছিলেন শ্রমজীবী মানুষ। তার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করেছেন সারা জীবন। সেই জলিল একটি দলের মনোনীত প্রার্থী। তিনি আমাদের গ্রামের গৌরব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর