বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নিরপেক্ষতায় ছাড় দেবে না ইসি

গোলাম রাব্বানী

নিরপেক্ষতায় ছাড় দেবে না ইসি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে জিরো টলারেন্স নীতিতে অনড় রয়েছে কমিশন। এজন্য রিটার্নিং অফিসারদের বিশেষ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিন ব্যালট বাক্স ছিনতাই হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনে ভীতি প্রদর্শন, চাপ সৃষ্টি করা হলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করে দেবে ইসি; ভোটকক্ষে একই সময়ে একাধিক ব্যালট বাক্স ব্যবহার না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে অবাঞ্ছিত ব্যক্তিরা যাতে প্রবেশ করতে না পারে, তা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি-এসপি রদবদল করা হয়েছে। ১৫৮ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ৩৩৮ থানার ওসি বদল করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুলিশ প্রশাসনে আরও রদবদল হবে। এ ছাড়া রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার; আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশের কোনো কর্মকর্তাসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ উঠলেই তাকে তাৎক্ষণিক বদলির পরিকল্পনা নিয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা সমুজ্জ্বল রাখতে রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিম ও সেল গঠন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনের তৎপরতা দৃশ্যমান করতেও বলা হয়েছে তাদের।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের তালিকা করে গ্রেফতার এবং বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশনা  দিয়েছে কমিশন। এ ছাড়া নির্বাচনে আচরণবিধি না মানলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, কমিশন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে জিরো টলারেন্স নীতিতে অনড়। এ ছাড়া প্রার্থীরাও আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন কোনো ছাড়া দেবে না। আইন ও বিধি মোতাবেক নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় আন্তরিকতার সঙ্গে শতভাগ পালন করছে। ভোট সামনে রেখে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি-এসপি বদলি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৫৮ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ৩৩৮ থানার ওসি রদবদল করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনসংশ্লিষ্ট যে কোনো কর্মকর্তা দায়িত্বে অবহেলা ও পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করলেই প্রমাণ সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, প্রার্থী যে-ই হোন না কেন আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারসহ সব নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী প্রার্থীদের শোকজ করা ছাড়াও প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না- এ ব্যাপারে কমিশনে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। কোনো প্রার্থীর নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলে তদন্ত করে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা অবাধ-সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর নির্বাচন করতে চাই। এজন্য কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা আন্তরিকভাবে নেবে। তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে প্রচার চালাতে পারবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি তদারকি করবেন। আমরা সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করব ইনশা আল্লাহ।

আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি ইসির : সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি না মানলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হুঁশিয়ারি প্রার্থীদের মাঝে প্রচার করতে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমের সদস্যসহ সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নির্বাচনি এজেন্টকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং ওই বিধান ভঙ্গের দায়ে শাস্তি বিশেষ করে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলকরণের বিষয় অবগত করানো নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর