রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চন্দনা নদী এখন সরু খাল

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

চন্দনা নদী এখন সরু খাল

দখল দূষণে চন্দনা নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে চন্দনা নদী। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি নদী না খাল। চন্দনা নদীর দুই পাড়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা। নদীর ওপর নির্মিত চন্দনা ব্রিজটি বালিয়াকান্দির চন্দনা নদীর দুই প্রান্তের মানুষকে একত্রিত করেছে।

এই নদীকে ঘিরেই এক সময় ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে ওঠে। নদীতে এক সময় স্টিমার, পাল তোলা বড় বড় নৌকা চলত। সেই চন্দনা নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে। চন্দনা এখন মরা খাল। এখন চন্দনা নদী দিয়ে নৌকা চলাই দুষ্কর। বছরের বেশির ভাগ সময় পানি থাকে না নদীতে।

পদ্মা নদী থেকে উৎপত্তি চন্দনা নদীর। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২৫ কিলোমিটার। স্থানীয় বয়োবৃদ্ধরা জানান, চন্দনা নদীকে কেন্দ্র করে আশির দশকে গড়ে উঠেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য। এই অঞ্চলের মানুষ ও কৃষকেরা নদীটির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু নদীটি দখল-দূষণে আজ মৃতপ্রায়। বছরের ৯ মাসই থাকে পানিশূন্য। ভরা মৌসুমে সেভাবে পানির দেখা মেলে না। ফলে এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। শুধু চন্দনা নদী নয় বালিয়াকান্দির ওপর দিয়ে বয়ে চলা গড়াই, হড়াই, চত্রা ও পুষশলী নদীও বর্তমানে পানিশূন্য। এসব নদীও দিনে দিনে ছোট       হয়ে আসছে।

গতকাল দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দনা নদীতে পানি কমে আসছে। প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে খন্ড খন্ড করে নদীর নির্দিষ্ট এলাকা দখল করেছেন জেলেরা। চন্দনা ব্রিজের পাশে বড় বড় ময়লার স্তূপ। নদীতীরে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে গড়ে ওঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

বালিয়াকান্দি উপজেলার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা বেশ বড় একটি উপজেলা। এ উপজেলার ময়লা আবর্জনা চন্দনা নদীতে ফেলা হয়। চন্দনা ব্রিজ থেকে সবাই ময়লা নদীতে ফেলে। যে কারণে নদী দূষণ হচ্ছে। সৌন্দর্য হারিয়েছে চন্দনা নদী। উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীরা নদীর তীর ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। নদীতে ময়লা ফেলা বন্ধ করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালিয়াকান্দির এক ব্যবসায়ী বলেন, বালিয়াকান্দিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার মতো নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। বালিয়াকান্দির ব্যবসায়ীরা চন্দনা নদীতে সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলেন।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ করা আছে কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেগুলো মানেন না।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল আমীন জানান, চন্দনা নদীটি পুনঃখনন করা দরকার। সেটি করতে গেলে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হয়। নদী দখলমুক্ত করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর