সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দার্জিলিং ও চায়না থ্রি কমলায় বাজিমাত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

দার্জিলিং ও চায়না থ্রি কমলায় বাজিমাত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং জাতের কমলা। বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে আবদুল হালিম কমলার চাষ করে সংসারে এনেছেন স্বাচ্ছন্দ্য। ২০০ কমলার গাছ তাকে দেখিয়েছে নতুন দিনের পথ। দুই বছরে তিনি আয় করেছেন প্রায় ৬ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আবদুল হালিম এখন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিতি করেছেন। কমলা চাষ করে বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচানোর পাশাপাশি এখন অনেকের কাছে সৌভাগ্যের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন আবদুল হালিম। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে শাখাহার ইউনিয়নের বাল্যা গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে তিনি। ইউটিউবে তার নজরে আসে কমলা চাষের বিষয়টি।

২০১৯ সালে এক বন্ধুর পরামর্শে নিজেদের পুকুরপারের ৩ বিঘা জমিতে শুরু করেন কমলা চাষ। সেখানে ২০০ গাছ দিয়ে শুরু হয় তার কমলার বাগান। বাগানে কমলা ধরতে শুরু করে ২০২২ সালে। ওই বছরই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রায় ৩ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেন। তার বাগানের কমলার স্বাদ-রস-মিষ্টতা তুলনামূলক ভালো- এ খবর ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। ইতোমধ্যে ওই ২০০ গাছে এ বছর উৎপাদিত কমলা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ টাকার বেশি। এখনো গাছে বিক্রির মতো কমলা রয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার। তার এ সাফল্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন বাগান দেখতে ভিড় করছে লোকজন।

স্থানীয়রা জানান, শুরুতে তার এ কাজটিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও এখন গাছ ভর্তি পাকা কমলা দেখে তারা অভিভূত। হালিম এখন এলাকার অনুকরণীয় কমলা চাষি। একই কথা বললেন চাঁদপাড়ার সানু মিয়া। তিনি বলেন, ‘এ কমলাবাগান দেখে আমি উৎসাহ পাচ্ছি। এভাবে চাষিরা কমলা চাষ শুরু করলে বিদেশ থেকে আর আমদানি করতে হবে না।’ কমলা চাষি আবদুল হালিম বলেন, ‘বিদেশে না গিয়েও সদিচ্ছার সফল প্রয়োগ করলে ও সবার উৎসাহ পেলে দেশের মাটিতেই অনেক কিছু করা সম্ভব। সেদিনের বেকার যুবক আমি এখন গ্রামের বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ জানান, কমলা চাষ করে হালিম যে সফলতা দেখিয়েছেন তা কৃষি বিভাগের জন্যও গৌরবময় সাফল্য। কমলার মিষ্টতা জাতের ওপর নির্ভর করে। কোন জাতের কমলা চাষ করলে মিষ্টি আরও বেশি হবে সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, যেহেতু সমতল জমিতে কমলার চাষ হচ্চে এবং মিষ্টতা পাওয়া গেছে এ ক্ষেত্রে কৃষক কমলা চাষ করে লাভবান হবে। কৃষি বিভাগ আবদুল হালিমকে সহযোগিতাসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। কমলা চাষে অন্য কৃষকদেরও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর