মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সময় বাড়লেও হজ নিবন্ধনে গতি নেই

♦ ফাঁকা ৯০ শতাংশ কোটা ♦ কোটার বড় অংশ ফাঁকা থাকার আশঙ্কা

ওয়াজেদ হীরা

২০২৪ সালে হজে যেতে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। প্রথম দফা সময় শেষে দ্বিতীয়বারের মতো চূড়ান্ত সময় বৃদ্ধির নোটিস দিলেও হজ নিবন্ধনের গতি খুবই মন্থর। এখনো প্রায় ৯০ শতাংশ কোটা পূরণ না হওয়ায় দেশ থেকে বড় একটি অংশ এবার ফাঁকা থাকার আশঙ্কা করছেন হজ সংশ্লিষ্টরা। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোটা পূরণ হওয়ার আশা করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। চলতি বছর যে হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে নয় দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ হয়নি, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার খালি ছিল। আগামী বছরের জন্য গত ১৫ নভেম্বর নিবন্ধন শুরু হয় এবং দ্বিতীয়বারের মতো ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর আর সময় বাড়বে না বলেও জানানো হয়েছে। কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। প্রথম দফায় প্রায় ৬ হাজার নিবন্ধিত হয়। এরপর সময় বাড়লেও নিবন্ধনে গতি খুবই মন্থর। গতকাল পর্যন্ত ১২ হাজার ৬৯২ জন নিবন্ধন করেছে। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ১ হাজার ৮৩৭ জন ও বেসরকারি ১০ হাজার ৮৫৫ জন। নিবন্ধনের সময় বাকি আছে আর ১২ দিন। কোটা পূরণ করতে হলে আগামী ১২ দিনে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫০৬ জনের নিবন্ধন করতে হবে। আগামী ৮ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি হবে। অন্য বছর হজচুক্তির পর নিবন্ধনের সুযোগ থাকলেও এবার সৌদির নিয়ম অনুসারে চুক্তির আগেই নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের দেশের মানুষ একটু দেরিতে নিবন্ধন করে অভ্যস্ত। অন্য বছর দেরিতে শুরু হয়, এবার দ্রুত শুরু হওয়ার একটা কারণ হতে পারে। তবে আমরা আশা করছি, এবার পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী যাবে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে জানাচ্ছি। নিবন্ধনের গতি কম থাকায় কয়েকটি বিষয় আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিবন্ধনের সংখ্যাটা সৌদি এ বছর আগে চেয়েছে। দেরি হলে ভিসা, ফ্লাইটসহ অনেক রকম সমস্যা হয়। সারা বিশ্বেই যাতে সমস্যা না হয় এজন্য সৌদি আগেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। সৌদির মিনায় তাঁবু এলাকায় আগের সিস্টেম থেকে বেরিয়ে নতুন সিস্টেম করেছে। মিনায় আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। হজযাত্রীরা নিবন্ধনে দেরি করলে মিনায় কাক্সিক্ষত এলাকায় তাঁবু পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। হজ শাখার এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, কম টাকায় ওমরা করা যাচ্ছে বলে এবার ওমরায় যাত্রী বেড়েছে। হজে আর্থিক বিষয় একটি ফ্যাক্টর হতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে এবার নির্দিষ্ট সময়ের পর আর সময় বাড়ানো হবে না। সরকারিভাবে আগামী বছর হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ হজ প্যাকেজের মধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সাধারণ প্যাকেজে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ হবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা।

এবারের চেয়ে ২০২৪ সালের হজের খরচ কিছুটা কম হলেও অনেকেই সাধ্যের বাইরে মনে করছেন। হজ নিবন্ধনে সাড়া না থাকার বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা যেতে চাইবেন তাদের যাওয়ার সুযোগ আছে। ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ সালে কোটা পূরণ শুরু হয়। এর আগে কিন্তু ফাঁকাই থাকত। মানুষ বেশির ভাগ সময় শেষের দিকে নিবন্ধন করে। আগামী যে সময় আছে এর মধ্যে পূরণ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর