বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রার্থিতা ফিরে পেলেন রিন্টু পালোয়ান, সালামের বহাল

♦ সালাহ উদ্দিন ও মেজর মান্নানের রিট খারিজ ♦ ফের আপিল বিভাগে সাদিক আবদুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন জটিলতায় ফেনী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল কবীর (রিন্টু আনোয়ার) ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তার পালোয়ানের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে তাদের প্রতীক বরাদ্দ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঋণখেলাপের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদ এবং নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সালামের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে হাই কোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। এ ছাড়া বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন। আবেদনে হাই কোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি। আজ এ বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।

রিন্টু আনোয়ার : ৪ ডিসেম্বর যাচাইবাছাইয়ের সময় ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য না পাওয়ার কারণ দেখিয়ে ফেনী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল কবীরের (রিন্টু আনোয়ার) মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ বিষয়ে তিনি আপিল করলে নির্বাচন কমিশনও তা নামঞ্জুর করে। পরে হাই কোর্টে রিট করেন রিন্টু আনোয়ার। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন রিন্টু। রিটের শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে তাকে প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন।

আবদুস সাত্তার পালোয়ান : ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন জটিলতায় লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তার পালোয়ানের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর যাচাইবাছাইয়ের সময় ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য না পাওয়ার কারণ দেখিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। আপিল করার পর তা ১৩ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশন। পরে তিনি হাই কোর্টে রিট করেন।

সালাহ উদ্দিন : ঋণখেলাপের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদের রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে ঋণখেলাপের দায়ে সালাহ উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সালাহ উদ্দিন। ১৫ ডিসেম্বর সে আপিল নামঞ্জুর করে দেয় কমিশন। এরপর তিনি হাই কোর্টে রিট করেন।

মেজর মান্নান : নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে তার রিট খারিজ করে দেন। অন্যদিকে হাই কোর্টের একই বেঞ্চ নোয়াখালী-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবদুল মান্নানের করা রিটটি খারিজ করে দেন। ঋণখেলাপের অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তা ৩ ও ৪ ডিসেম্বর ওই দুই আসনে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন তিনি। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন তার আপিল নামঞ্জুর করে। এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান তিনি।

আবদুস সালাম : ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সালামের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে হাই কোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। গতকাল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ঋণখেলাপের অভিযোগ এনে আবদুস সালামের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন তিনি। ১৮ ডিসেম্বর হাই কোর্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেন। হাই কোর্টের এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে যান আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল আবেদীন খান।

সাদিক আবদুল্লাহ : বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন। আবেদনে হাই কোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি। গতকাল আবেদনের বিষয়টি জানান সাদিক আবদুল্লাহর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে চেম্বার জজ আদালতে। এর আগে মঙ্গলবার সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে তার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। তার আগে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন হাই কোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্নেল জাহিদ ফারুক। ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্ব ইস্যুতে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে ইসি।

সর্বশেষ খবর