শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রমত্তা কালীগঙ্গায় হয় চাষাবাদ

কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

প্রমত্তা কালীগঙ্গায় হয় চাষাবাদ

১ হাজার ৩৭৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মানিকগঞ্জ চারদিক দিয়েই নদীবেষ্টিত। নদীর দৈর্ঘ্য ছিল ২৪১ কিলোমিটার। তবে এখন সেই অবস্থা নেই। নদী আছে কিন্তু তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি আসলে নদী না ফসলের মাঠ। কারণ প্রমত্তা অনেক নদীই এখন ফসলের জমি।

এমন নদীর একটি হলো মানিকগঞ্জ শহর ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কালীগঙ্গা। মৃতপ্রায় এ নদী দেখে এখন বোঝার উপায় নেই এক সময় এই নদীতে বছরজুড়েই পানি থাকত। নদী দিয়ে বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ, নৌকা দেশ-বিদেশে চলাচল করত। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদীকে করা হয় ক্ষতবিক্ষত। বিভিন্ন স্থানে নদী ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। এই সঙ্গে নদীও ভরাট হয়ে পরিণত হয়েছে চরাঞ্চলে। প্রমত্তা সেই কালীগঙ্গা এখন চাষাবাদের জমি। কোথাও কোথাও নদীর মধ্যে বাড়িঘর করে বসবাস করছেন লোকজন।

সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর বুকজুড়ে চাষ হচ্ছে নানা ফসল। ভরাটের  কারণে সংকুচিত হয়েছে নদীর প্রস্থ। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়েন নদীপারের লোকজন। ধারণা পাওয়া গেছে, কালের বিবর্তনে মানিকগঞ্জের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান চারটি নদীই এখন মৃতপ্রায়। বর্ষা মৌসুম ছাড়া এ নদীগুলো থাকে পানিশূন্য। নদীর বুকজুড়ে ধু-ধু বালুচর, কোথাও চাষের জমি, কোথাও গরু চরানোর মাঠ কিংবা দুরন্তদের খেলাধুলার দৃশ্য চোখে পড়ে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জ জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ধলেশ্বরী, পুরাতন ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, ইছামতি নামে চারটি নদী রয়েছে- যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪১ কিলোমিটার। ধলেশ্বরী নদী ঘিওর উপজেলার যাবরা থেকে শুরু করে সাটুরিয়ার তিল্লী, বরাইদ হয়ে জাগিরের ভিতর দিয়ে সিঙ্গাইরের শেষ মাথা পর্যন্ত মিশেছে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার। উত্তর তরার নাছির উদ্দিন (৭৭) বলেন, ‘উজান থেকে পলি আসায় কালীগঙ্গা নদী ভরাট হয়ে গেছে। নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার চালানোর কারণে অনেকের বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।’ আরও কয়েকজন জানান, কালীগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ত্বরা ও বেউথা ব্রিজের উত্তর পাড় ভরাট করে দখল করার কারণে নদীর দক্ষিণ পাড় ভেঙে যাচ্ছে। প্রতিবছর দক্ষিণ পাড়ের লোকজন ভাঙনের শিকার হন। নদীতীরবর্তী এলাকার লোকজন ভাঙন রোধে নদীতে ড্রেজিং বন্ধ করার জন্য সরকারের কাছে অনবরত দাবি করে আসছেন।

সর্বশেষ খবর