সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের মাঠে ৯৪ নারী

জিন্নাতুন নূর

ভোটের মাঠে ৯৪ নারী

কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো নারীরা পিছিয়ে আছেন। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার ৫ শতাংশের কিছু বেশি নারী প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এবার ভোটের মাঠে লড়াই করতে যাচ্ছেন মোট ৯৪ জন নারী প্রার্থী। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬৯ জন। গতবারের চেয়ে এ সংখ্যা সামান্য বেশি হলেও বিশেষজ্ঞরা একে যথেষ্ট বলে মনে করছেন না।

নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, আসছে সংসদ নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুসারে ৩০০ আসনে এবার মোট ১ হাজার ৮৯৫ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী মাত্র ৯৪ জন। হিসাবে যা দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এর মধ্যে ২০ জন আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির আটজন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আটজন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ২৭ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নয়জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির একজন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চারজন, বাংলাদেশ জাতীয়াবাদী আন্দোলনের একজন, জাকের পার্টির একজন, জাসদের একজন, তৃণমূল বিএনপির সাতজন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের তিনজন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের তিনজন এবং গণফ্রন্টের একজন। 

দেশের রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ করার বাধ্যবাধকতার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালে। তখন পর্যন্ত দেশের নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দলই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনও সময় আরও ১০ বছর বাড়িয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় সংশোধনী এনেছে। সে লক্ষ্য এখন ২০৩০ সাল। এর আগে ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ করাসহ বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলো।

তথ্য বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬৯ জন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৯ জন। দশম সংসদ নির্বাচনে তা দেশে কমে দাঁড়ায় ২৯ জনে। আর জাতীয় সংসদের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে লড়েছিলেন মাত্র দুজন নারী।

এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ২০টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীর মধ্যে আছেন গোপালাগঞ্জ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গাইবান্ধা-৩ থেকে উম্মে কুলসুম স্মৃতি। বগুড়া-১ থেকে সাহাদারা মান্নান। সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে মোছা. জান্নাত আরা হেনরী। বাগেরহাট-৩ আসন থেকে হাবিবুন নাহার। বরগুনা-২ আসন থেকে সুলতানা নাদিরা। শেরপুর-২ আসন থেকে মতিয়া চৌধুরী। ময়মনসিংহ-৩ আসন থেকে নিলুফার আনজুম। কিশোরগঞ্জ-১ থেকে সৈয়দা জাকিয়া নূর। মানিকগঞ্জ-২ থেকে মমতাজ বেগম। ঢাকা-৪ আসন থেকে অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। গাজীপুর-৩ আসন থেকে রুমানা আলী। গাজীপুর-৪ আসন থেকে সিমিন হোসে (রিমি)। গাজীপুর-৫ আসন থেকে মেহের আফরোজ চুমকি। কুমল্লিা-২ আসন থেকে সেলিমা আহমদ। চাঁদপুর-৩ আসন থেকে ডা. দীপু মনি। চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে খাদিজাতুল আনোয়ার। কক্সবাজার-৪ থেকে শাহীন আক্তার। মুন্সীগঞ্জ-২ থেকে সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। রংপুর-৬ আসন থেকে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জাতীয় পার্টির আটজন প্রার্থীর মধ্যে আছেন- ঠাকুরগাঁও-২ এর মোছা. নুরুন নাহার বেগম, ঝিনাইদহ-১ আসনের মনিকা আলম, বরিশাল-৬ আসনের নাসরিন জাহান রত্না, নেত্রকোনা-২ আসনের মোছা. রহিমা আক্তার (আসমা সুলতানা), ঢাকা-১ এর সালমা ইসলাম, ঢাকা-১৮ আসনের শেরীফা কাদের, কুমিল্লা-১০ এর জোনাকী হুমায়ূন, কক্সবাজার-১ এর হোসেন আরা।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের আটজন প্রার্থী হচ্ছেন- ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মোছা. রিম্পা আক্তার, রংপুর-১ আসনের শ্যামলী রায়, নাটোর-৪ আসনের শান্তি রিবারু, খুলনা-৪ এর মনিরা সুলতানা, টাঙ্গাইল-৭ এর রূপা রায় চৌধুরী,  মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে নুরজাহান বেগম রিতা, গাজীপুর-২ আসনে রেহেনা আক্তার রিনা, ফরিদপুর-৪ এ নাজমুন নাহার।

স্বতন্ত্র ২৭ জন প্রার্থীরা হলেন- ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের মোছা. আশা মণি, নীলফামারি-৩ আসনের মার্জিয়া সুলতানা, রংপুর-৩ আসনের মোছা. আনোয়ারা ইসলাম রানী, রংপুর-৬ আসনের তাকিয়া জাহান চৌধুরী, গাইবান্ধা-১ আসনের আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার, গাইবান্ধা-৫ থেকে ফারজানা রাব্বী বুবলী, বগুড়া-১ থেকে মোছা. শাহজাদা আলম লিপি, বগুড়া-২ থেকে মোছা. বিউটি বেগম, নওগাঁ-৩ থেকে মাহফুজা আকরাম চৌধুরী, রাজশাহী-১ থেকে শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া, ঝিনাইদহ-১ থেকে মুনিয়া আফরিন, নড়াইল-১ থেকে চন্দনা হক, খুলনা-৩ থেকে ফাতেমা জাহান সাথী, ময়মনসিংহ-৩ থেকে নাজনীন আলম, ময়মনসিংহ-৬ থেকে সেলিমা বেগম, ময়মনসিংহ-৮ থেকে কানিজ ফাতেমা, নেত্রকোনা-১ থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা, মুন্সীগঞ্জ-২ থেকে সোহানা তাহমিনা, মুন্সীগঞ্জ-৩ থেকে চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন, ঢাকা-১৪ থেকে সাবিনা আক্তার তুহিন, নরসিংদী-২ থেকে আফরোজা সুলতানা, মাদারীপুর-৩ থেকে মোসা. তাহমিনা বেগম, সুনামগঞ্জ-২ থেকে ড. জয়া সেন গুপ্তা, হবিগঞ্জ-১ থেকে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, কুমিল্লা-৬ থেকে আনজুম সুলতানা, লক্ষ্মীপুর-২ থেকে চৌধুরী রুবিনা ইয়াসমিন লুবনা, লক্ষ্মীপুর-৪ থেকে মাহমুদা বেগম।

এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নয়জন প্রার্থীর মধ্যে আছেন দিনাজপুর-৩ আসনের পারুল সরকার লিনা, দিনাজপুর-৪ আসনের মোসা. আজিজা সুলতানা, গাইবান্ধা-১ আসনের মর্জিনা খান, রাজশাহী-১ আসনের নূরুন্নেসা, রাজশাহী-৪ আসনের জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের আলেয়া, ঢাকা-১৫ আসনের নাজমা বেগম এবং ঢাকা-২০ আসনের রেবেকা সুলতানা এবং মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের দোয়েল আক্তার।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির এক প্রার্থী হলেন গাইবান্ধা-১ আসনের মোছা. আইরিন আক্তার। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চারজন হলেন- বগুড়া-৩ আসনের মোছা. আফরিনা পারভীন, গাজীপুর-৫ আসনের উর্মি, নরসিংদী-৩ আসনের মিরানা জাফরিন চৌধুরী, ঢাকা-১১ আসনের ফারাহনাজ হক চৌধুরী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একজন প্রার্থী হলেন পাবনা-২ আসনের ডলি সায়ন্তনী। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একজন প্রার্থী হলেন পাবনা-১ আসনের মোছা. পারভীন খাতুন। জাকের পার্টির একজন প্রার্থী হলেন- কুমিল্লা-৩ আসনের বেনজির আলম অনন।

তৃণমূল বিএনপির সাত প্রার্থী হলেন- বাগেরহাট-২ আসনের মরিয়ম সুলতানা, বাগেরহাট-৪ আসনের লুৎফুন নাহার রিক্তা, সাতক্ষীরা-১ আসনের সুমি, বরিশাল-৩ আসনের শাহনাজ বেগম, টাঙ্গাইল-৮ আসনের পারুল, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের অন্তরা সেলিমা হুদা, ঢাকা-৯ আসনের মোসা. রুবিনা আক্তার (রুবি)। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের তিনজন প্রার্থী হলেন- ময়মনসিংহ-১ আসনের রোকেয়া বেগম, ঢাকা-৭ আসনের নুরজাহান বেগম, ঢাকা-১৮ আসনের ফাহমিদা হক সুকন্যা। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের তিনজন প্রার্থী হলেন- ঢাকা-১১ এর সাদিকুন নাহার খান, কুমিল্লা-৪ আসনের শাহেরা বেগম এবং মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ। গণফ্রন্টের একজন হলেন- ঢাকা-৯ আসনের তাহমিনা আক্তার।

সর্বশেষ খবর