মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে সিআইডির দুই সদস্য আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর মধ্যে দুজন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) কর্মরত। গতকাল বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবি বলছে, সিআইডিতে কর্মরত দুজনের নেতৃত্বে রাজধানীজুড়ে দাপিয়ে বেড়াত একটি অপহরণকারী চক্র। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর করা মামলার তদন্তে নেমে এ দুজনসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- এসআই রেজাউল করিম (৩৯), কনস্টেবল আবু সাঈদ (৩২), বরিশালের উজিরপুরের ইমন (২১), একই উপজেলার আবদুল্লাহ আল ফাহিম (২১) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার শরীফ হোসেন (২৬)। ফাহিম ও ইমনকে ৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। বাকি তিনজনকে রবিবার গ্রেফতার করা হয়। ডিবির সাইবার ও স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর) তাদের গ্রেফতার করে।

হারুন অর রশীদ বলেন, ডিবির কাজ হলো তদন্ত করা। যখন থানায় কোনো মামলা হয় তখন সেই মামলার তদন্তভার গ্রহণ বা ছায়া তদন্ত করা হয়। রাজধানীর ভাটারা থানায় গত আগস্টে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ী একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন- সিআইডি পরিচয়ে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় শেষে তাকে ফেলে রেখে যায়। এমন কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডিবির সাইবার ও স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর) তদন্তে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে     বরিশাল থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অপহরণ ও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। এ সময়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন চক্রের একজন পরিদর্শক ও আরেকজন এসআই পদের দুই পুলিশ সদস্য জড়িত। যদিও এই পরিচয় সঠিক নয়। যিনি নিজেকে পরিদর্শক রবিউল পরিচয় দিয়েছেন তিনি একজন কনস্টেবল। তারা নিজেদের ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করত। সিআইডিতে কর্মরত দুজনের সঙ্গে অপহরণ চক্রের সদস্যরাও জড়িত। পরবর্তী সময়ে দুজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয় ডিবি। এরপর অপহরণ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, পুলিশ কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায় নেবে না। কোনো পুলিশ সদস্য যদি অপহরণকারীদের সঙ্গে মিশে অপরাধ করে, তখন তাকেও ছাড় দেওয়া হয় না। যে দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে আমরা তাদের রিমান্ডে আনব। জানার চেষ্টা করা হবে আর কেউ জড়িত আছে কি না।

এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে ভুয়া পুলিশ, র‌্যাব ও ডিবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছি। এবারও সিআইডি পরিচয়ে একটি অপহরণ চক্র ধরতে গিয়ে আসল সিআইডি সদস্যদের গ্রেফতার করেছি। প্রতি বছর পুলিশ বাহিনীতে খারাপ কর্মকান্ডের কারণে যে পরিমাণ শাস্তি পায়, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তা পায় না। একদিকে পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধŸতন কর্মকর্তারা যেমন মানবিক, তেমনি এসব বিষয়ে অমানবিক এবং কঠোর। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও অপহরণের মতো অপরাধ করলে এটা পুলিশ বাহিনী বরদাস্ত করবে না।

 

সর্বশেষ খবর