শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চুরি করা পিস্তলে ভাই হত্যার প্রতিশোধ নেন পিচ্চি মনির

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বাসার সামনে রাতের অন্ধকারে রমজান আলী ওরফে পেটকাটা রমজানকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাতরা। এই হত্যাকান্ডের তদন্তে নেমে চুরি, মাদক, পরকীয়া ও ভাই হত্যার প্রতিশোধসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে চলে আসে। ভাই হত্যা ও স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার প্রতিশোধ নিতেই রমজানকে হত্যা করা হয়। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মনির ওরফে পিচ্ছি মনির। আর রমজান হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি চুরি করতে গিয়ে পাওয়া, যা মাদকের বিনিময়ে চোরের কাছ থেকে নেন মনির।

গতকাল     রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় জুয়েল মাহমুদ আপন ওরফে চোর আপন ও রাব্বী নামে দুই পেশাদার চোর স্বর্ণালংকার চুরি করতে গিয়ে গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ দুটি পিস্তল চুরি করে। পরবর্তীতে জুয়েলের কাছ থেকে ১ হাজার ইয়াবা ও সাত কেজি গাঁজার বিনিময়ে একটি পিস্তল নেন পিচ্চি মনির। এরপর এই অস্ত্র দিয়ে মনির তার আপন ভাইকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার নেপথ্যে ২০১৭ সালে মনিরের বড় ভাইকে হত্যা, মনিরের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া ও মাদক নিয়ে রমজানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর রাতে কামরাঙ্গীরচর থানার মুসলিমবাগে রমজানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যায় মনিরসহ টাইগার রাব্বি, আলী হোসেন ও সাগর সরাসরি অংশ নেয়। হত্যার পরে ৯ নভেম্বর আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ টাইগার রাব্বি, আলী হোসেন ও সাগরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যে ও আদালতের জবানবন্দিতে হত্যার মূল পরিকল্পনা ছিল চোরা জুয়েল ও পিচ্চি মনির।

 ডিবি প্রধান হারুন বলেন, রমজানকে হত্যার ঘটনায় তার বোন বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তে নেমে একটি অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ। তবে অত্যন্ত কৌশলে আত্মগোপনে ছিল পিচ্চি মনির। গ্রেফতার এড়াতে মনির পালিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করেন। তারা গ্রেফতার এড়াতে গোয়েন্দা স্টাইলে ঘুরতে থাকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। গত বুধবার তাকে বান্দরবান থেকে গ্রেফতারের পর কামরাঙ্গীরচরে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।

ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, পিচ্ছি মনিরের বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যাসহ ২৭টি মামলা আছে। মনিরের সহযোগী জুয়েল মাহমুদ আপন ওরফে চোর আপনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা। সে পেশাদার চোর। এ ছাড়াও সে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ দুটি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। কেরানীগঞ্জ থেকে চুরি করে আনা পিস্তলের মূল মালিকের অস্ত্রের লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল ও গুলিসহ সব কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। এখন অস্ত্রের মূল মালিকের লাইসেন্স ছিল কি না তা আমরা তদন্ত করে দেখব।

সর্বশেষ খবর