শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভোটের চ্যালেঞ্জ কোথায়

সহিংস পরিবেশে ভোট দিতে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ

শারমিন মুরশিদ

জিন্নাতুন নূর

সহিংস পরিবেশে ভোট দিতে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যে সহিংসতা হবে। এরই মধ্যে সহিংসতা হয়ে গেছে। ভোটের আগ পর্যন্ত সহিংসতা হবে। এজন্য ভোটের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে একটি সহিংস পরিবেশে ভোট দিতে যাওয়া।

শারমিন মুরশিদ বলেন, মানুষ যদি ভোট দিতে যেতে না পারে সেটা একটি চ্যালেঞ্জ। আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিবেশ যদি খুব উগ্র হয়। ভোটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে একজন ভোটার যে ভোট দিতে যাবেন তার কাছে নিজের কোনো পছন্দের প্রার্থী নেই। এটা সবচেয়ে বড় ভোটের চ্যালেঞ্জ। একজন ভোটার ভোট দিতে ইচ্ছুক, তিনি ভোট দিতে যাবেন কিন্তু তার কোনো পছন্দের প্রার্থী নেই। এ পরিস্থিতির মধ্যে একজন ভোটারকে ভোট দিতে যেতে হবে। এক্ষেত্রে একজন ভোটার যেহেতু তার পছন্দের প্রার্থী পাচ্ছেন না। তিনি হয়তো ভোট দিতে যাবেনও না। আরেকটি ঘটনা ঘটতে পারে, ভোটাররা ‘মন্দের ভালো’র মধ্যে অন্য কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে যাবেন। ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের দেশে এবার নির্বাচনে বহুদলীয় অংশগ্রহণ হচ্ছে না। যদিও সরকার নিজের মতো করে সংজ্ঞা করে নির্বাচনকে বহুদলীয় করেছে। কিন্তু যদি আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেখি এবং গণতন্ত্রের সংজ্ঞার ভিত্তিতে যাচাই করি এটা একটা বহুদলীয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিই এক ধরনের ভোটের চ্যালেঞ্জ তৈরি করে দেয়। এবারের এমন একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন, যেখানে নিজের মানুষের সঙ্গে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এ নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছে তার বেশির ভাগই একটি দলের প্রার্থী। এর শরিকরা একটি দলের সদস্য। এখানে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দলটি নিজেরা নিজেদের মধ্যে সংকট তৈরি করছে। এ সংকটের ভিতরে ইতোমধ্যে মানুষ মারামারিও শুরু করে দিয়েছে। একজন দলের আরেকজন কর্মীকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। পিরোজপুর-১ আসনে এরই মধ্যে সহিংসতা ঘটেছে। এ আসনের উদাহরণ দিলে বলা যায়, যে প্রার্থী সরকারি দলের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি এক ধরনের অরাজকতা তৈরি করছেন। সেই অঞ্চলের মানুষ এটা বলছেন যে, সেই প্রার্থী প্রভাব বিস্তার করছেন। এই প্রার্থীর লোকজন স্বতন্ত্র ও অন্য প্রার্থীর লোকদের মারছেন। এরা তো সবাই একই দলের লোক। এখন সেই এলাকায় যদি সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থীর প্রভাব বেশি থাকে তাহলে ভোটাররা যদি অন্য প্রার্থীকে ভোট দিতে যেতে চান তাহলে তারা ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। কারণ প্রভাবশালী প্রার্থীর লোকেরা এমনটি হতে দেবেন না। এই নির্বাচন যেহেতু বহুদলীয় নির্বাচন নয়, এটা সংঘাতময় নির্বাচন। এই সংঘাতময় নির্বাচনই হচ্ছে এবারের নির্বাচনে ভোটের চ্যালেঞ্জ। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, এটি খুবই সরল বিষয়। আমি একজনকে ভোট দিয়ে আসব কিন্তু জিনিসটা এত সহজভাবে ঘটছে না। এ পরিবেশটিকে নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদে যদি রাখা যায় তাহলে যারা অন্তত ভোট দিতে যেতে আগ্রহী তারা যেতে পারবেন। আমরা একটি সিনারিও তৈরি করে ফেলেছি। এখন এই সিনারিওতে নির্বাচন হবে। আমার ধারণা নির্বাচনটি ভালোভাবেই হবে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মানুষ হয়তো ভোট দিতেও যাবেন। কিন্তু নৈতিকতার জায়গায় এ নির্বাচন ভীষণ খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর