রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রথমবার ভোট দেবে ১ কোটি ৫৪ লাখ তরুণ

জিন্নাতুন নূর

দেশের প্রায় ১২ কোটি (১১ কোটি ৯৬ লাখ) ভোটারের মধ্যে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ভোটার। এর বাইরে আরও ১ কোটি তরুণ ভোটার রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিপুল সংখ্যক নতুন ও তরুণ ভোটার এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর। এসব ভোটারের সমর্থন পেতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোও ইশতেহারে তাদের জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যেহেতু নতুন ভোটাররা সংখ্যায় অনেক, এজন্য নির্বাচনের ফলাফলে তারা অবশ্যই ভূমিকা রাখবে। তরুণ ভোটারদের অনেকেই বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এজন্য এবার নতুন ভোটাররা আগ বাড়িয়ে ভোট কেন্দ্রে কতটুকু আসবে সেটি আজকেই দেখা যাবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর পাঁচ বছরে ২ লাখ

যুবকের মধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা যুবঋণ বিতরণের পাশপাশি ২ লাখ ৫০ হাজার যুবককে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টিও তাদের ইশতেহারে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা তরুণ-তরুণীদের জন্য বেকার ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত বছরের ১৯ নভেম্বর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রধান টার্গেট প্রথম ভোটার হওয়া তরুণ শ্রেণি।’ নতুন ভোটারদের বড় অংশই শিক্ষার্থী। এদের অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাওয়ার ব্যাপারে বেশ উচ্ছ্বসিত। কথা হলে তরুণ ভোটারদের একজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব ইয়াসির বলেন, ‘ভোট দেওয়া নাগরিক অধিকার। যেহেতু দেশে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং এদিন সারা দেশে সাধারণ ছুটি থাকবে। আমি মনে করি নাগরিকদের ঘরে বসে না থেকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া উচিত। কারণ আমরা সবাই যদি নিরুৎসাহিত হয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাই তাহলে ভোট সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে না।’ নির্বাচন বিষয়ক বিশ্লেষক ও বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে নতুন ভোটাররা অবশ্যই ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ তাদের সংখ্যা অনেক। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমাদের অনেক তরুণ ভোটার এ নির্বাচন নিয়ে হতাশ। দেশের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থাৎ হানাহানি, দুর্বৃত্তায়ন, সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িকতার জন্য তরুণদের অনেকেই হতাশ। রাজনীতির প্রতি তাদের চরম অনীহা তৈরি হয়েছে। তরুণ ভোটারদের অনেকেই বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ কারণে এবার অনেকে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। এবার যদিও একটি ব্যতিক্রমী অবস্থা ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এখন দেখার বিষয় নতুন ও তরুণ ভোটাররা এ নির্বাচনে কেমন অংশগ্রহণ করেন।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এবারের জাতীয় নির্বাচনে তরুণ ভোটাররা ভীষণ ‘কনফিউজড’ হবে। নতুন ভোটাররা আগ বাড়িয়ে ভোট কেন্দ্রে কতটুকু আসবে তা আজকেই আমরা দেখব। আশঙ্কা করছি তরুণদের একটি বড় সংখ্যক ভোট দেবে না। কারণ এ ভোটাররা অত্যন্ত বিচলিত এবং কনফিউজড অবস্থায় আছে।’

সর্বশেষ খবর