সোমবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিএনপির অফিসে ছিল তালা খালেদা জিয়ার বাসা সুনসান

শফিউল আলম দোলন

বিএনপির অফিসে ছিল তালা খালেদা জিয়ার বাসা সুনসান

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিনও তালাবদ্ধ ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের পর থেকে দীর্ঘ দুই মাস ১০ দিন ধরে বন্ধ নয়াপল্টনের এই কার্যালয়। বিএনপির বর্জনের মধ্যেই সারা দেশে হয়ে গেল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট বর্জন কর্মসূচি সফল করতে দলটি গতকালও হরতাল পালন করেছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকের সঙ্গে থাকা চেয়ার-টেবিলসহ সবকিছুতেই ধুলার আস্তরণ পড়েছে। কলাপসিবল গেটের ভিতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা। অফিসের পাশের ফুটপাতেই দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। আশপাশের দোকানগুলোও ছিল বন্ধ। উপস্থিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জানান, সকাল থেকে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে তারা সেখানে দেখেননি। তবে বিএনপির কার্যালয় নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। তাদের দাবি, বিএনপির লোকেরাই তাদের অফিস তালাবদ্ধ করে রেখেছে। এ বিষয়ে দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। কেউ কার্যালয়ে গেলেই তাকে গ্রেফতার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এমনকি অফিসের কয়েকজন স্টাফকে পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে।     

খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় সুনশান নীরবতা : গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে এখন শুধুই নীরবতা। গত বছর ৯ আগস্ট থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাড়িতে কাজের লোক আর সিকিউরিটি ছাড়া কেউ নেই। বাড়ির অদূরে পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে ডিউটি করতে দেখা গেলেও দলীয় নেতা-কর্মী কিংবা আত্মীয়স্বজন কাউকে দেখা যায়নি। গতকাল বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, দুজন নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কোনো লোকজন নেই। মূল ফটকের বাইরে থেকে বাড়ির ভিতরে কারও কোনো আওয়াজও পাওয়া যায়নি। চারদিকে সুনশান নীরবতা গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের বাড়িটিতে। দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন খালেদা জিয়া। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সঙ্গে আছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। এ ছাড়া নার্স, ডাক্তার তো রয়েছেনই। পশ্চিম পাশ থেকে ৭৯ নম্বর সড়কের প্রবেশমুখে বাম পাশের কর্নার প্লটটিতে বৃক্ষবেষ্টিত সাজানো-গোছানো বাড়িটির নাম ‘ফিরোজা’ ভবন। এটির মালিক বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেজর (অব.) কামরুল ইসলামের ছেলে তানভীর ইসলাম। ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মঈনুল রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর  কিছুদিন ভাই শামীম এস্কান্দারের গুলশানের বাসায় ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল ফিরোজায় ওঠেন তিনি।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এ বাসা থেকেই গাড়িবহর নিয়ে গিয়েছিলেন বকশীবাজারের বিশেষ জজ আদালতে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে আদালত তাকে ৫ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। পরে উচ্চ আদালতে এই সাজার মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে দীর্ঘ দুই বছর এক মাস কারাগার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লকে কারা হেফাজতে ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২১ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওই দিন দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দলীয় নেতা-কর্মী বেষ্টিত গাড়িবহর নিয়ে গুলশানের ফিরোজায় ফেরেন তিনি।

সর্বশেষ খবর