শেষ বেলায় বাতিল হলো নৌকার মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা। বাঁশখালী থানায় ঢুকে ওসিকে হুমকি দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে সাংবাদিককে                মারধর, পুলিশকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। সবশেষ গতকাল ভোটের দিন ওসির কক্ষে ঢুকে নিজ অনুসারী কাউন্সিলরকে ছাড়াতে গিয়ে ধমকানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রার্থিতা বাতিলে কঠোর পদক্ষেপ নেয় ইসি। জানা গেছে, গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ জলদী আশকরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল গফুরকে আটক করে পুলিশ। তারপর তাকে ছাড়াতে থানায় যান এমপি মোস্তাফিজ। ওসির কক্ষে গিয়ে তিনি জানতে চান, আমার লোক কী অন্যায় করেছে? ধরে আনছেন কেন? জবাবে ওসি বলেন, এনে বসিয়ে রাখছি। তখন ওসিকে ‘এই থাম’ বলে এমপি মোস্তাফিজ চেয়ার ছেড়ে ওঠেন। এ ঘটনার ভিডিও করতে থাকা এক পুলিশ সদস্যের দিকে তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এমপির অনুসারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। বাঁশখালী থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, কাউন্সিলর আবদুল গফুর জাল ভোট দেওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। ভোট দিতে না পেরে তিনি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাকে আটক করা হয়। ওসি আরও জানান, ভোটচলাকালীন বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার সরল ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র উত্তর সরল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। এ সময় এমপি মোস্তাফিজ ও তার একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় তার সমর্থকরা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। কেন্দ্রটির ঈগল প্রতীকের তত্ত্বাবধায়ক মানিক চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চলছিল। এমপি সাহেব দলবল নিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন বাধা দেন। তিনি ধমকালে উত্তেজিত লোকজন তার গাড়ি ভাঙচুর করেন। এখানে ঈগল প্রতীকের কোনো সমর্থক ছিল না। জানা গেছে, এর আগেও এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ওসি তোফাজ্জলকে ফোন দিয়ে কোনো পুলিশ তার লোকের ওপর হাত দিলে হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন। প্রসঙ্গত, এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকে মুজিবুর রহমান ও ট্রাক প্রতীকের আবদুল্লাহ কবির লিটন।