বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
কেন হলো এই বিপর্যয়

ভয়ভীতি ও টাকা হারিয়ে দিয়েছে

ফজলে হোসেন বাদশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ভয়ভীতি ও টাকা হারিয়ে দিয়েছে

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে পরাজিত হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা। নির্বাচনে তাঁর এমন বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে বাদশা বলেছেন, নৌকার প্রার্থীকে হারাতে চাপ, ভয়ভীতি, টাকা এবং নির্বাচনের মাঠ দখলের ঘটনা ছিল। সে কারণেই এমন ফলাফল হয়েছে। তিনি এই প্রতিনিধির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে গতকাল বলেন, নির্বাচনি প্রচারের শুরু থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা সুনির্দিষ্টভাবে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে কাজ করেন। ভোটের দিন সকালে গণমাধ্যমের সামনে আমি সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির নির্দেশে সব ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুবিধাভোগীর কার্ড আটকে রেখে কাঁচি প্রতীকে ভোট দিতে চাপ প্রদান করেন। বাদশা বলেন, নির্বাচনের দিন ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিজস্ব বাহিনী প্রতিটি ওয়ার্ডে নৌকা প্রতীকের ভোটারদের চিহ্নিত করে তাদের কেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহ করে। ক্রমাগত হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে ভোটের দিন ভোটাররা নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসতে পারেনি। যার প্রভাব পড়েছে ভোট প্রদানের হারে। রাজশাহী-২ আসনে এ কারণেই ভোট গ্রহণের হার ২৬ শতাংশের কাছাকাছি। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, নৌকা প্রতীককে হারাতে শুরু থেকে টাকা ছড়ানো হয়েছে। কে বা কারা টাকা ছড়িয়েছে, সেটি প্রকাশ্য। রাজশাহীর মানুষ যাকে ঠিকভাবে চেনেও না, তাকে বিজয়ী করতে ভোট গ্রহণেও কারচুপি করা হয়েছে। নৌকার পক্ষে যারা কাজ করতে মাঠে নেমেছে, তাদের নানাভাবে সিটি করপোরেশন থেকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আওতায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্প সিডিসির কর্মীদের কাঁচি প্রতীকের পক্ষে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সিডিসি টাউন ফেডারেশন, সিএইচডিএফ, ক্লাস্টার ও সিডিসি কর্মীদের সরকারি সুযোগসুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে এবং ক্ষেত্রবিশেষ প্রয়োজনমাফিক সুবিধা বন্ধের হুমকি দিয়ে কাঁচি প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে ভোট প্রদানেও বাধ্য করা হয়। অর্থাৎ রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে পুরোপুরি কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে এ নির্বাচন প্রভাবিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও এ নির্বাচনে পাশে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একজন শীর্ষ নেতার মদদে আওয়ামী লীগের বড় অংশ নৌকার বিপক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নামে মাইকিং করে প্রকাশ্যে কাঁচির জন্য ভোট চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে।

সর্বশেষ খবর