দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। গতকাল রাজধানীর গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব ড. মোহাম্মদ শাহজাহান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনএম। লিখিত বক্তব্যে ড. শাহজাহান বলেন, বিএনএম নির্বাচনের আগে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিতে ভোটে অংশ নেয়। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি যে, নির্বাচনের দিন সকাল ১০টা থেকে ১১টার পরই আমাদের বেশির ভাগ প্রার্থীর নির্বাচনি এলাকায় বিশেষ রাজনৈতিক দলের যারা একই ঘরানার আলাদা প্রার্থী হিসেবে পরিচিত, তাদের যার যেখানে দাপট খাটানোর মতো অবস্থা ছিল তারা সেখানে তা শুরু করে। তিনি বলেন, নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় তারা ব্যালট কেটে প্রিসাইডিং অফিসারদের বিশেষ কক্ষে নিজ নিজ বাক্স ভরতে শুরু করে যা ক্রমেই ব্যাপক গতি সঞ্চার হয়। একপর্যায়ে তাদের জন্য ভোট কারচুপির উৎসবে পরিণত হয়। ফলে ভোটারদের ভোটদানে তেমন একটা অংশগ্রহণ না থাকলেও গণনায় বিশেষ দলের দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপকভাবে এগিয়ে থাকাটাই ছিল স্বাভাবিক। তাই যা হওয়ার তা-ই হয়েছে অর্থাৎ কাজির গরু খোঁয়াড়ে না থাকলেও কেতাবে ঠিকই বিদ্যমান ছিল। ড. শাহজাহান বলেন, সরকার একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং আসন ভাগাভাগি করে নেওয়া দল মিলেই ২৯৭টি আসন নিজেদের করে নিয়ে নেয়; যা বাস্তবতার নিরিখে শুধু অসংগতিপূর্ণই নয়, অকল্পনীয়ও বটে। এক প্রশ্নের জবাবে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। স্থানীয় ক্যাডার ও প্রশাসনের সহায়তায় ভোটারদের ভয়ভীতি এবং বাধা দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এর ফল সুখকর হবে না। তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিত না হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী। নৌকায় ভোট দিতে এমন হুমকিধমকির জন্য জনগণ কেন্দ্রে আসেনি। নিরপেক্ষ ভূমিকা নেওয়ার জন্য আরও শক্ত ভূমিকা নিতে পারত সরকার কিন্তু তারা নীরব থেকেছে। মানুষের মাঝে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আস্থা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনএম স্থায়ী কমিটির সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, শাহজামাল রানা, মো. আবদুল্লাহ, হোসেন আহমেদ আশিক, মো. মমিনুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন (অব.) জাকির, মো. হুমায়ুন, অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।