শিরোনাম
শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাওনা টাকা চাওয়ায় খুন হয়েছেন টিকিট বিক্রেতা ফারুক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের টিকিট বিক্রয়কর্মী ছিলেন ফারুক (২৮)। একই পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন। সন্তানের অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার খরচ জোগাতে নিজামের কাছে পাওনা টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন ফারুক। আর এ কারণেই তাকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নিজাম উদ্দিন (৩৬), সোহাগ (৩৮), জহিরুল ইসলাম (৪৮), রনি হোসেন (২৩) ও বাদশা (২৩)। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত স্ক্রু ড্রাইভার ও লোহার রড জব্দ করা হয়।

৯ জানুয়ারি সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ের পাশে একটি চোখ ওপড়ানো অজ্ঞাত লাশ দেখে স্থানীয়রা পাশের র‌্যাব ক্যাম্পে খবর দেয়। র‌্যাব-১ প্রাথমিকভাবে লাশের সঙ্গে থাকা মানিব্যাগে বিভিন্ন নথিপত্র এবং ওআইভিএস ডিভাইসের মাধ্যমে নাম ও পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর সংস্থাটির হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নিজাম ও ফারুক হোসেন একসঙ্গে টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় ঢাকা এক্সপ্রেস নামে একটি পরিবহনের কাউন্টারে কাজ করতেন। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছরের পরিচয়ের সুবাদে তাদের মধ্যে প্রায়ই লেনদেন হতো। ফারুক তার পাওনা টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করায় নিজাম তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ঢাকা এক্সপ্রেসের একটি খালি বাসে ফারুক হোসেনকে তুলে পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাসে ওঠানোর পর সোহাগ দেশি অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করেন। বাদশাহ নামে আরেক ব্যক্তি বাসের টুলবক্স থেকে স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে ফারুকের এক চোখ উপড়ে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এরপর ৩০০ ফিট থেকে রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ের পাশে রঘুরামপুরের রাস্তার পাশে ফারুকের লাশ ফেলে বাসটি নিয়ে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে পালিয়ে যান আসামিরা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৮ জানুয়ারি নিজাম উদ্দিনের কাছে ফারুক পাওনা টাকা চাইলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। ফারুকের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে নিজাম তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য সোহাগ, জহিরুল, রনি, বাদশাসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টায় নিজাম মোবাইলে ফোন করে ফারুককে টাকা নেওয়ার জন্য কাউন্টারে আসতে বলেন। ফারুক টাকা নিতে সেখানে গেলে পরিকল্পনামতো তাকে মারধর করে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। র‌্যাব বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১-এর সহায়তায় র‌্যাব-১-এর যৌথ দল রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুরের টঙ্গী ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। ফারুক হোসেন স্ত্রী-সন্তানসহ তুরাগের বাউনিয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

 

সর্বশেষ খবর