রাজধানীর সন্নিকটে কহরদরীয়া খ্যাত টঙ্গী তুরাগ নদের তীরে ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমাকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছে সব প্রস্তুতি। সারা মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসম্মেলনের ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা। ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এর পর চার দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ১১ ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উভয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। আগত মুসল্লিরা জেলাওয়ারি খিত্তায় অবস্থান নেবেন। প্রতি বছরের মতো এবারও উর্দু ও হিন্দি ভাষায় বয়ান করবেন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ও আরবি ভাষায় তর্জমা করা হবে।
কহরদরীয়া নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ময়দানের উত্তর পশ্চিমে তৈরি হচ্ছে বয়ানমঞ্চ। এবং পশ্চিমপ্রান্তে কামাড়পাড়া বিজ্র সংলগ্ন বিদেশি মেহমানদের থাকার ঘর। আগত মুসল্লিদের নদী পারাপারের জন্য থাকবে সেনাবাহিনীর তৈরি করা ভাসমান সেতু। জেলাওয়ারি মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ময়দান। প্রচ শীত উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শতশত মুসল্লি সকাল থেকে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। আগত মুসল্লিরা ময়দানে সামিয়ানা তৈরি, চট বাঁধাই, খুঁটি গাঁথা, মাটি কাটা, ময়দানের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার, ড্রেন পরিষ্কার, বিদেশিদের কামরা নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ করছেন। মুসল্লিরা দিনের মেহনত ও আল্লাহকে রাজি খুশি করতেই ময়দানে এসে স্বেচ্ছায় শ্রম দিচ্ছেন। এগিছে চলছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার সব প্রস্তুতি। গতবারের মতো এবারও প্রথম পর্বে জোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা টঙ্গী ময়দানে ইজতেমার আয়োজন করছেন। এর পর মাঝে চার দিন বিরতি দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সা’দ অনুসারীরা ইজতেমা আয়োজন করবেন। মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এক মুসল্লি মুফতি কামাল উদ্দিন জাহানপুরী বলেন, আল্লাহর কাজে স্বেচ্ছয়া শ্রম, অর্থ ও সময় দেওয়া এর চেয়ে বড় নজির নেই। আল্লাহর কাজে দ্বীনের দাওয়াতে মেহনত করা, আল্লাহকে রাজি খুশি করা। দ্বীনের মেহনত করলে এর ইজ্জত আল্লাহ তা-আয়ালাই দেবেন। কোরআনে রয়েছে আল্লাহর কাজে জানমাল অর্থ সময় দিয়ে সাহার্য্যকারী হও, তাহলে আখেরাতে জিহাদের সমতুল্য মর্যাদা পাবে। তিনি আরও বলেন, তাবলিগের মেহনতে যে বিরোধ ছিল, তা এখন আর নেই। গুটি কয়েক লোক ছাড়া, দ্বীনের মেহনতে কাজ করছে সবাই। এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বর্তমান সরকারের পর্যবেক্ষণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগত মুসল্লিদের সেবায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ময়দানের চারপাশে বহুতল ভবন নির্মাণ করে টয়েলেট ও গোসল করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
