বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
হার নিয়ে যত কথা

প্রশাসনের সহায়তায় জাল ভোটের উৎসব

পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রশাসনের সহায়তায় জাল ভোটের উৎসব

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ অভিযোগ করেছেন যে, প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জাল ভোটের উৎসব করে লাঙলকে পরাজিত করেছে। এ আসনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন তিনি। এ আসনে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক।

পীর মিসবাহ বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে পুলিশ ও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তার কর্মীদের সশরীরে ও ফোন করে নির্বাচনি কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে ভয়ভীতি দেখান। নির্বাচনের দিন দুপুর ১২টার পর প্রায় সব কেন্দ্র থেকে কোথাও তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে, কোথাও ভয় দেখিয়ে নৌকায় ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

তিনি বলেন, সদর উপজেলার বানীপুর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। তার মতো কিছু কর্মকর্তাকে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু রামানুজ আচার্য নামের ওই প্রিসাইডিং অফিসারের হাতে নৌকায় সিল মারা ব্যালট তার এজেন্ট দেখতে পান। প্রতিবাদ করলে সিল মারা ব্যালটগুলো তিনি পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেন। পরে ওই কেন্দ্রের নৌকার এজেন্টকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দিলেও প্রিসাইডিং অফিসারকে কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। এ ধরনের অনেক কর্মকর্তা প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার একটি কেন্দ্রে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের জাল ভোট দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। মিসবাহ আরও অভিযোগ করেন যে, নির্বাচনের দিন দুপুর ১২টার পরে ড. সাদিকের নিজের কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় জাল ভোট দেওয়া শুরু হয়। এভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় সব কেন্দ্রে জাল ভোটের উৎসব চলে।

তিনি বলেন, জাল ভোট দেওয়ার বিষয়টি তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ফোন করে জানান। পরে সব জায়গা থেকে জাল ভোট দেওয়া শুরু হলে তাঁকে বার বার ফোন দিলেও তিনি তার ফোন রিসিভ করেননি।

তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক প্রশাসনকে ব্যবহার করে জাল ভোটের মাধ্যমে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচন শুরুর পর থেকেই তাঁর সমর্থকরা প্রচারণা চালান, যে কোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করা হবে। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান সুনামগঞ্জ এলে আমি এই বিষয়টি অবহিত করি। জালিয়াতির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন পীর মিসবাহ। উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক নৌকা প্রতীকে ৯০ হাজার ৫৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭২১ ভোট।

 

সর্বশেষ খবর