ঢাকার দোহারে একটি বাড়িতে আগুনে শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধরা হলেন- প্রবাস ফেরত জুলহাস শেখ (৫৩), তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তার (৩৫), ছেলে জুনায়েদ আহমেদ (৮), মেয়ে জান্নাত (১৩) ও ভাতিজি তাবাসসুম আক্তার (১০)। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, ঘরটিতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গত সোমবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার মোকশেদপুর ইউনিয়নের দিতপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

দগ্ধ জুলহাসের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, রাতে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল জুলহাসের পরিবার। রাত ৩টার দিকে তাদের সেই ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জলতে দেখা যায়। ঘরের দরজার বাইরের তালা লাগানো ছিল। ঘরের পেছনের একটি ওয়াল ভেঙে ঘরের সবাইকে বের করা হয়। তাদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মঙ্গলবার (গতকাল) বিকালে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। দগ্ধ জুলহাস জানান, কিছুদিন আগে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়কে আমার ছোট ভাই নিজের বাড়িতে রেখেছিলেন। তবে সে মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চার দিন আগে কে বা কারা আমাদের কয়েকটি ঘরে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। ওই রাতেই বাড়ির পাশ থেকে কয়েক গ্যালন পেট্রল পাওয়া যায়। আমাদের ধারণা ওই যুবকই সোমবার রাতে ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে। দগ্ধ ফাহিমা আক্তার জানান, মধ্যরাতে আগুনের আঁচ পেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে টয়লেটে ঢুকে পড়ি। পানির কল ছেড়ে সেখানেই বসে ছিলাম। পরবর্তীতে বাথরুমের দেয়াল ভেঙে স্বজনরা আমাদের বের করে আনে। তবে ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ ছাড়া আমার মুখমণ্ডল ও হাত সামান্য দগ্ধ হয়। আমাদের উদ্ধার করে প্রথমে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। আমার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। নির্বাচনের সময় বাসায় খিচুড়ি খাওয়ানো হয়েছিল। তবে কে বা কারা, কী কারণে আমাদের পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল সে বিষয়টি এখনো বলতে পারছি না। বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. মো. তরিকুল ইসলাম জানান, জুলহাসের মুখমণ্ডলের ৩ শতাংশ আর তার স্ত্রী ফাহিমার ৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া সবারই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে জুলহাসকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।