শিরোনাম
শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বেতনের দাবিতে কারখানার ভিতরেই রাতযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে বেতন না পেয়ে কারখানার ভিতরে রাত কাটিয়েছেন শ্রমিকরা। চার মাস ধরে তারা বেতন পান না। নগরীর সাকোয়াটেক্স নামের একটি গার্মেন্ট কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। কারখানাটির মালিক রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি এনামুল হক। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজিত হন দলীয় প্রার্থীর কাছে। রাজশাহী নগরীর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত সাকোয়াটেক্স কারখানাটিতে প্রায় ৩০০ শ্রমিক কর্মরত আছেন। সবার বেতন বকেয়া পড়েছে। বেতন আদায়ে তারা বুধবার সকাল থেকে কারখানার ভিতরে অনশন শুরু করেন। কনকনে ঠান্ডায় সারা রাত তারা কারখানার ভিতরেই ছিলেন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত তারা ভিতরেই অবস্থান করে বিক্ষোভ করছিলেন। রাতে প্রত্যেকের এক মাসের বেতন দেওয়া হয়। এরপর শ্রমিকরা চলে যান। পিয়ারা বেগম নামের এক শ্রমিক জানান, চার মাস বেতন পাননি। সর্বশেষ নির্বাচনের মধ্যে বেতন চাইতে গেলে বলা হয়, কারখানার মালিক (এনামুল হক) নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ভোট পার হলে বেতন দেবেন। ভোটে তিনি হেরে গেছেন। বেতনের খবর নেই। পিয়ারা বেগমের ছেলেও একই কারখানায় কাজ করে। সেও তিন মাস বেতন পায়নি। শ্রমিকরা জানান, এ কারখানায় কেউ তিন মাস, কেউ আট মাস ধরে বেতন পাননি। তাদের বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে, দোকানে বাকি খাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দিতে পারেননি বাড়িভাড়া, দোকানের বাকি টাকাও। কারও কারও সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বেতন না পেয়ে এরকম বিপদে পড়া কর্মচারীরা শেষে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকরা আরও জানান, কেউ বেতন চাইতে গেলে কারখানার কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করেন। যারা বেতন চান, তাদের নামের তালিকা করা হয়। এর পরদিন থেকে আর কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। সম্প্রতি এভাবে ১৫ থেকে ২০ জনকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। শম্পা খাতুন নামের এক শ্রমিক জানান, তিন-চার মাস ধরে প্রতি সপ্তাহেই বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়। সোম কিংবা বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানান। কিন্তু বেতন দেওয়া হয় না। মাসের পর মাস তারা এভাবে বেতন ছাড়া কাজ করে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। কারখানার লিংকিং অপারেটর আশা বেগম বলেন, এখানে শ্রমিকরা উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক পান। মাসে গড়ে তারা ১৭ হাজার টাকা করে বেতন পান। কারখানার ২০০ শ্রমিকের কেউ সর্বনিম্ন তিন মাস এবং কেউ সর্বোচ্চ আট মাসের বেতন পাবেন। তিনি নিজে চার মাসের বেতন পাবেন। প্রতি মাসে নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। দোকানে অনেক টাকা বাকি পড়েছে। এখন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না। খুবই বিপদে আছেন। এনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক এমপি এনামুল হক জানান, শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এমনটা ঘটেছে। তবে এখন সবকিছু স্বাভাবিক আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর