সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত প্রকাশকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত প্রকাশকরা

কদিন পরেই ভাষা-সংস্কৃতির মাস ফেব্রুয়ারি। একই সঙ্গে এ মাসের প্রধান অনুসঙ্গ অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ ঘনিয়ে আসছে। স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তীর্ণ প্রান্তর আর বাঙালির সৃজন ও মননের প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসবেন দোকানিরা। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে বইয়ের প্রকাশক এবং মেলা প্রাঙ্গণ তৈরির নির্মাণ শ্রমিকদের।

প্রথা অনুযায়ী পয়লা ফেব্রুয়ারি ভাষার মাসের প্রথম দিন শুরু হবে বইমেলা। তাই এখন স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তীর্ণ প্রান্তর এখন মুখরিত নির্মাণ শ্রমিকদের হাতুড়ি বাটালের ঠুকঠাক আর টুংটাং শব্দে। গতকাল দেখা গেছে, এলোমেলোভাবে উদ্যানজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। যত্রতত্র পড়ে আছে ইটের টুকরা, বালির স্তূপ, পেরেকসহ স্টল নির্মাণের নানা উপকরণ। এ অবস্থায় দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য অফিস সময়ের পরেও নির্মাণ শ্রমিকদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার ২৩ জানুয়ারি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দের পর স্টল ও প্যাভিলিয়নের নম্বর পাবেন প্রকাশকরা। প্রকাশকরা জানান, লাগামহীনভাবে কাগজের দাম বৃদ্ধিতে তারা এবারের মেলার সফলতা নিয়ে অনেকটা সন্দিহান। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, এবার ৮-৯ বর্গফুটের ৮০০-৯০০ স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। আশা করছি সঠিক সময়েই সবকিছু ভালোভাবে সম্পন্ন করা যাবে। আশার কথা হচ্ছে এবারের মেলায় থাকছে না কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান। অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৭ থেকে ১৬ বছর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ব্যবসায়ের স্বার্থে মেলার পরিবেশকে কলুষিত করে আসছিল। এবারের মেলায় তাদের দৌরাত্ম্য থাকছে না বলে প্রাণের মেলা তার চিরায়ত সৌন্দর্যের পথে হাঁটবে। বিগত ১৬ বছর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা পাওয়ার পর এবার কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট না রাখাটা মেলা আয়োজনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এই চ্যালেঞ্জ উতরে বাংলা একাডেমি এবার একটি পরিচ্ছন্ন ও গোছানো মেলা উপহার দিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বইমেলাকে বিজ্ঞাপনের মেলায় পরিণত করেছিল। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হীন মেলার আয়োজন বইপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুসংবাদ। তিনি জানান, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না থাকায় এবারই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার শেষ বছর। আগামী বছর থেকে বইমেলা অন্য কোনো ভ্যেনুতে অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে গতকাল দেখা গেছে, ফকিরাপুল, আরামবাগ, বাংলাবাজার ও কাঁটাবন ঘুরে বই বাঁধাই শ্রমিকদের ব্যস্ততা। ফকিরাপুল এবং আরামবাগের ছাপাখানায়ও দিনরাত চলছে ছাপার কাজ। সবকিছু মিলিয়ে বর্তমানে মেলাকে নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটছে লেখক, প্রকাশক, নির্মাণ শ্রমিক, ছাপাখানা শ্রমিক ও বই বাঁধাই শ্রমিকদের। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্যান্যবারের মতো এবারও প্রায় কয়েক শতাধিক স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। এর মধ্যে বরাবরের মতো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর স্টল আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল।

সর্বশেষ খবর