সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাসপাতালে ভাঙচুর ৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এদিকে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গতকাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছে। অন্যদিকে মৃত্যুর ঘটনায় পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪ নম্বর বাংলাবাজার ব্রিজের পাশে একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে চার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী নিহত হন। তারা হলেন- নিহাল পাল (২৬), জুবায়ের আহমদ সাব্বির (২৬), মেহেদী হাসান তামাল (২৫) ও সুমন আহমদ (২৫)। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়- শুক্রবার রাত ১টার দিকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুজন করে চারজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরতরা সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয়রা নিহতদের সিলেট নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন, কিন্তু চালক না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে প্রথমে হাসপাতালের নিচতলা এবং পরে স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ ছাড়া হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক হিল্লোল সাহা এবং স্টাফ আবদুস সাত্তারকে মারধর করেন। এ সময় হাসপাতালে থাকা সরকারি জিপে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এদিকে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই ওই চারজনকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসায় অসহযোগিতা করা হয়েছে। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি। এ সময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে করা মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিহাল পালের বাবা বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

অন্যদিকে এ চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গত শনিবার পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা প্রশাসনের এডিএম ইমরুল হাসান, বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন ও  ফায়ার সার্ভিসের একজন করে কর্মকর্তা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিআর?টিএ সিলেটের সহকারী প?রিচালক রিয়াজুল ইসলাম জানান, পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দুর্ঘটনায় সার্বিক বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর