বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
সারা দেশে বিএনপির হালচাল

কর্মসূচিতে সমাগম নেই

বরিশাল

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল বিএনপির লেজেগোবরে অবস্থা। সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খেটেছেন দলটির প্রথম সারির অনেক নেতা। এখনো অনেকে কারাগারে। একাধিক মামলার আসামি হয়ে সিনিয়র অনেক নেতা এখনো আত্মগোপনে। ২৮ অক্টোবরের পর এ বিভাগে ৩১টি মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে ছন্নছাড়া বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মী। এ অবস্থায় দলীয় কর্মসূচিতে লোক সমাগম করতে পারছেন না তারা। তবে মামলা-হামলা ও নির্যাতনে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার হয় দাবি করে শিগগিরই ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন বরিশাল উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর বিএনপির নেতারা। বিভাগীয় সদর বরিশালে বিএনপির কার্যক্রম পরিচালিত হয় ৩টি ইউনিট কমিটির মাধ্যমে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে মহানগর কমিটি, জেলার ৫টি উপজেলা গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ নিয়ে উত্তর জেলা বিএনপি এবং উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ ও বরিশাল সদর উপজেলা নিয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির মাধ্যমে রাজনীতি পরিচালিত হয়। গত ২৮ অক্টোবরের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিল উত্তর জেলা বিএনপি। হরতালের পক্ষে এবং লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে বরিশালে দুইবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান। হরতালের পক্ষে মিছিল করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক, ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কসহ বহু নেতা-কর্মী। যদিও অনেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখনো কারাগারে রয়েছেন অনেকে। অন্যদিকে নির্বাচনের প্রাক্কালে মহানগরে পুলিশের ১০ মামলায় আসামি হয়ে গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে আছেন বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা থেকে তৃণমূল কর্মীরাও। এ অবস্থায় দলীয় কর্মসূচিতে লোকসমাগম হচ্ছে না তাদের। ৮৫ দিন পর সদর রোডের অফিস খুলে গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত করে জেলা বিএনপি। ওইদিন বিকালে মহানগর বিএনপিও দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত করে। দুটি কর্মসূচিতে লোকসমাগম হয়নি তেমন। বিএনপির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পকিল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বরিশাল বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এরপর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত উত্তর জেলা বিএনপির অন্তত ৩০০ নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার দাবি, নেতা-কর্মী গ্রেফতারের কারণে দল দুর্বল হয়নি। কোনো কর্মী দল ছেড়ে যায়নি। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এবং এরপর দুইবার বরিশালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছি। পুলিশের পিটুনি খেয়েছি। তারপরও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছি। তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবরের পর জেলার পাঁচ উপজেলায় বিএনপির ৪ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী আগামী ২৬ জানুয়ারি জেলায় এবং ২৭ জানুয়ারি মহানগরে কালোপতাকা মিছিল কর্মসূচি আছে। আরও কর্মসূচি আসছে। মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, সাম্প্রতিক ১০ মামলায় মহানগরে ১ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এদের অনেকে গ্রেফতার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। অনেকে এখনো কারাগারে। তারা আবারও ফিনিক্স পাখির মতো ঘুড়ে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা তার। বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক দমনপীড়নে বিএনপির বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। বিএনপি আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর