বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

বাড়ানো হবে কর্মসংস্থান ক্যাডার বৈষম্য থাকবে না

ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী

ওয়াজেদ হীরা

বাড়ানো হবে কর্মসংস্থান ক্যাডার বৈষম্য থাকবে না

বর্তমান সরকারের মেয়াদে কর্মসংস্থানের ওপরই অধিক জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব শূন্যপদগুলো পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়াও সরকারি চাকরিতে ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং এর কর্মকর্তারা হবেন স্মার্ট এবং জনবান্ধব। আমরা সেবার মান আরও বাড়াতে চাই। সচিবালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী। গত সরকারের সময় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ফরহাদ হোসেন এবার পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। একই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রশাসনের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে চলমান কাজকে আরও দ্রুত গতিতে শেষ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, গত পাঁচ বছর অনেক কিছু করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ রূপকল্প, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজানো। তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসন জনবান্ধব। আমরা আরও দ্রুত সেবা দিতে চাই। আমাদের স্লোগান হলো- জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করা জনমুখী জনপ্রশাসন। আমরা যাতে আরও সৃজনশীলতার সঙ্গে, আন্তরিকতার সঙ্গে দেশপ্রেম নিয়ে মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করতে পারি সেটি নিশ্চিত করতে চাই। মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের অর্থনীতি-আর্থ সামাজিক, অবকাঠামো উন্নয়ন, সুযোগ-সুবিধা সব কিছুই আগামীতে আরও বাড়ানো হবে। ফলে মানুষের প্রত্যাশাও বাড়বে। সব কর্মকর্তা যেন তাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে কোনো ব্যত্যয় না করে সে আহ্বান জানাব। কারও নামে কোনো অভিযোগ উঠলে মন্ত্রণালয় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমাদের উইংগুলো, অটোমেশন কার্যক্রম যেন সহজে হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করব। প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্টকে পরিপূর্ণভাবে কাজের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হবে অন্যতম লক্ষ্য। আমাদের অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট উইং তাদের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা। মন্ত্রণালয়ের অধীন সব প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চাই।

ফরহাদ হোসেন বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমাদের বিপিএটিসির একটা আইকনিক ভবন হচ্ছে, ময়মনসিংহে বিভাগীয় কমিশনার নতুন অফিস দ্রুত শেষ করা এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল প্রত্যাশা ও টার্গেট অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করতে চাই। এ ছাড়াও, যুগের সঙ্গে প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করব। কারিকুলাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলাতে হবে। আগামী দিনে চাহিদা অনুযায়ী আমাদের লোকবল বেশি প্রয়োজন হবে। সব কর্মকর্তাকে দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও লেখাপড়ায় উচ্চ শিক্ষিত করে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে।

বেশি পদোন্নতিতে প্রশাসনের পিরামিড ভেঙে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংস্থাগুলো বড় হচ্ছে কিন্তু তাদের অর্গানোগ্রাম তৈরি হয়নি। এটি তৈরির কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই আমি প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে বলেছি সহযোগিতার জন্য। অর্গানোগ্রাম তৈরি করতে গেলে অনেক ধাপ আছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা খুব জরুরি। অর্গানোগ্রাম হয়ে গেলে এ ধরনের সমস্যাও যেমন থাকবে না, কর্মপরিবেশ সুন্দর হবে। ডেস্কে কার কী কাজ সেটিও নির্দিষ্ট হবে। শূন্য পদ নিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংস্থা বা বিভাগের যে শূন্য পদগুলো আছে সেটি নিয়েও আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিচ্ছি। ইতোমধ্যেই প্রথম মন্ত্রিসভায় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন দ্রুত শূন্য পদ পূরণ করার জন্য। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়া মাত্রই আমরা অন্যান্য কার্যক্রম শেষ করতে পারব। আমাদের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) আছে। আমরা চাচ্ছি কোন সংস্থায় বা কোন প্রতিষ্ঠানে লোকবল নাই তারা চিঠি দিয়ে জানালে আমরা ৪১ দিনের মধ্যে সেটি শেষ করব। পাশাপাশি দেশে বেকারের সংখ্যা কমানো, অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিদেশে পাঠানোর জন্য দক্ষতা সম্পন্ন কর্মকর্তা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হবে।

ক্যাডার বৈষম্য নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি অনেকের কাছেই কষ্টের বিষয়। এটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সবাইকে নিয়ে বৈঠক করব। অন্যরা কোন কোন ক্ষেত্রে বৈষম্য মনে করছে এটি জানব। বৈষম্য কমাতে একটা কমিটি করা হবে যেন এর স্থায়ী সমাধান হয়। একেকটা ক্যাডারের কাজের ধরন একেক রকম। বৈষম্যগুলো বাস্তবতার আলোকে সন্তোষজনক সমাধান করতে চাই।

নতুন মেয়াদে অগ্রাধিকার কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন, আগামী পাঁচ বছর সে অনুসারে কাজ করব। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি।

 

সর্বশেষ খবর