আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনায় শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো নাটক ‘কহে ফেসবুক’। গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি।
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ক্রমশ কাছের মানুষ যেন দূরে সরে যাচ্ছে। আপনজনের পরিবর্তে অদেখা ব্যক্তির প্রতি তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম আকর্ষণ। পরিবার থেকে বন্ধুদের আড্ডা সর্বত্রই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে তিন বন্ধুর এক আড্ডার কথা বলা যায়। এক টেবিলে বসেও তাদের কারও মুখে কোনো কথা নেই। আলাপচারিতার কোনো বালাই নেই। পরস্পরের সঙ্গে হচ্ছে না ভাব বিনিময়। প্রত্যেকেই ব্যস্ত মুঠোফোন নিয়ে। কাছের মানুষকে ছাপিয়ে তাদের পুরো মনোযোগ ফেসবুক, টুইটারসহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ায়। একই রকম দৃশ্যের দেখা মিলছে পরিবার কিংবা ঘরে ঘরে। আপনজনের সঙ্গে সম্পর্কের নৈকট্য ঘুচে গিয়ে ভাব জমছে দূরের মানুষের সঙ্গে। অন্তর্জালের মোহময় সেই জগতে হারিয়ে যাচ্ছে আবেগ-অনুভূতি। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী। এটি রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মামুনুর রশীদ। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ বলেন, ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় একটা কথা শুনেছিলাম, বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ। ওই সময় গ্রামীণ জীবনে বিজ্ঞানের কোনো সুফল পৌঁছায়নি। কিন্তু পরবর্তীতে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটল। একে একে দেশে প্রবেশ করল টেলিভিশন, মোবাইলফোন, ফেসবুক, টুইটারসহ আরও কত কি! এর মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পেল ফেসবুক। স্মার্টফোনে জায়গা নেওয়া ফেসবুক জীবনের গতিকে বাড়িয়ে দিল বিপুলভাবে। এই গতি সারা পৃথিবীকে ছুড়ে দিল ভয়ংকর সব সমস্যার মধ্যে। পৃথিবী হয়ে উঠল স্পর্শহীন। সেই স্পর্শের জন্য মানুষ তাই আর্তনাদ করে ওঠে। শয়ন কক্ষ, ড্রইং রুম থেকে কবরস্থান সব জায়গার দখল নিয়েছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে নাটকের ঘটনাকাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- কামরুল হাসান, রুবলী চৌধুরী, আরিফ হোসেন, জুবায়ের জাহিদ, সুরভী রায় প্রমুখ।