বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আরও পাঁচ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আরও পাঁচ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ

দেশের আরও পাঁচ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। সোমবার ২২ জেলার পর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২৭ জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এর মধ্যে সাত জেলায় মাঝারি ও ১৯ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অনুভব করেছেন ভুক্তভোগীরা। এর সঙ্গে ঘন থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়া অব্যাহত থাকায় ঠান্ডা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। চুয়াডাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ ডিগ্রির ঘরে। আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের প্রায় সব জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। এ ছাড়া কুমিল্লা, বরিশাল, ভোলা, মৌলভীবাজার জেলা ও টেকনাফেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু এবং ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতেও একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। গতকাল আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাষে বলা হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কিছু বাড়বে। কিছু জায়গায় প্রশমিত হলেও চলমান শৈত্যপ্রবাহও অব্যাহত থাকবে বলেও পূর্বাভাষে জানানো হয়েছে। খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

কষ্টে আছে নিম্নআয়ের মানুষ : তীব্র ঠান্ডায় নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছেন নিম্নআয়ের মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে খুড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। জীবিকার তাগিদে বের হলেও কাজ না পেয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। দিনাজপুরের কৃষিশ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে কাজে যেতে পারছি না। এই ঠান্ডা আর বাতাসে কাজ করতে গেলে হাত-পা কোকড়া লেগে যাচ্ছে। খাগড়াছড়িতে শীতার্ত মানুষ অর্থকষ্টে রয়েছে। কনকনে শীতে বাইরে কাজে যেতে না পারায় পরিবার নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে তারা।

কয়েক জেলায় স্কুল বন্ধ : পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় অন্তত ১২ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার খবর জানা গেছে। এর মধ্যে নীলফামারী, ফরিদপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চপড়, গাইবান্ধা, খুলনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়, আবার কোথাও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। এদিকে, রাজশাহী ও কুষ্টিয়ায় সমন্বয়হীনতার কারণে স্কুলে যাওয়ার পর বন্ধের সংবাদ পান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন তারা।

হাসপাতালে রোগীর ভিড় : শেরপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও পাবনাসহ দেশব্যাপী ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে সর্দিকাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত রোগী বাড়ছে বলে জানিয়েছেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম। সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। শেরপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুদের নিয়ে পিতা-মাতার লম্বা লাইন লেগেই থাকছে।

পাহাড়েও বাড়ছে শীত : খাগড়াছড়িতে দুই দিন ধরে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ফলে প্রচ শীতে কাঁপছে পাহাড়। শীতের তীব্রতার কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাসাবাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। অতিরিক্ত কুয়াশা থাকায় দূরপাল্লার যানবাহন দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।

এ প্রতিবেদন প্রস্তুতে শেরপুর, নীলফামারী, ফরিদপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, খুলনা, খাগড়াছড়ি, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, রংপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি সহায়তা করেছেন।

সর্বশেষ খবর