বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নৌকা তুলে দেওয়ায় উচ্ছ্বাস তৃণমূলে

রফিকুল ইসলাম রনি

সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের ভোটে নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়ার ঘোষণায় উচ্ছ্বাস বইছে তৃণমূল আওয়ামী লীগে। এতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমিয়ে আনাসহ যোগ্যরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ের নেতারা।

সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আপাতত স্থানীয় সরকারের ভোটে দলীয় প্রতীক নৌকা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে সংসদ নির্বাচনে নৌকা দেওয়া হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী রাখা হয়। অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সামনে কুমিল্লার উপনির্বাচন ও ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনসহ উপজেলা নির্বাচন। সে নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রতিযোগিতামূলক করতে দলীয় মনোনয়ন দেবে না। অর্থাৎ নৌকা কাউকে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে যে-কেউ নির্বাচন করতে পারবেন এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও যার পক্ষে খুশি কাজ করতে পারবেন। সোমবার রাতে দলের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, এর ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বিভেদ কিছুটা হলেও কমে আসবে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, দলীয় মনোনয়ন কেন্দ্র করে এক ধরনের বিভেদ সৃষ্টি হয়। যার রেশ অনেক দিন স্থায়ী হয়। ফলে দলের সাংগঠনিক শক্তি কমে যায়। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপিসহ তাদের কিছু মিত্র নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ফলে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে প্রতীক তুলে দেওয়া হয়েছে। জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় এমপিলীগ, আত্মীয়লীগের অবসান হবে। ফলে যিনি সত্যিকারের জনপ্রিয় ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য তিনি নির্বাচিত হবেন। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সনজিত কর্মকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নৌকা না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এর ফলে নৌকা পেলেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার প্রবণতা, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। যারা সত্যিকারের জনপ্রিয় তারাই ভোটে অংশগ্রহণ করবেন। দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ পছন্দের প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে।’ ফেনীর পরশুরাম উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু বলেন, ‘উপজেলা পরিষদসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার সিদ্ধান্ত খুব ইতিবাচক। এর ফলে নির্বাচন আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও পক্ষপাতহীন হবে। দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখায় অধিক জনপ্রিয় প্রার্থীরা অংশ নেবেন। প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকলে যে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয় এবং দলের বাইরেও ভালো প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আমরা সে বার্তা পেয়েছি।’ তিনি বলেন, প্রতীক তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এমপি-মন্ত্রীরা যেন কোনো প্রার্থীর সমর্থন বা হস্তক্ষেপ না করেন সে বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর হতে হবে।

শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা বলেন, ‘নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। নৌকা প্রতীক সংসদে থাকাই ভালো। জেলা পরিষদে যেমন নৌকা দেয় না। এখন উপজেলা ও পৌরসভায় নৌকা না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’

সর্বশেষ খবর