শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই বছরেও শুরু হয়নি তিস্তায় নতুন রেলসেতু নির্মাণকাজ

নজরুল মৃধা, রংপুর

তিস্তা নদীর ওপর রেলসেতুর মেয়াদ পার হয়েছে ২৪ বছর আগে। তাই বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে তিস্তা রেলসেতুর পাশে নতুন একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। সেতুর নকশাও চূড়ান্ত হয়েছে। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে দুই বছর আগে। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় তিস্তার ওপর নতুন রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখছে না। স্থানীয়দের দাবি তিস্তা নদীর ওপর নতুন রেলসেতু নির্মাণ হলে এ অঞ্চলে রেল যোগাযোগে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশন সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা রেলসেতু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এর পাশেই আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা করা হয়। সমীক্ষা যাচাই শেষে ২০২২ সালে চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮৫০ কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় সেতু নির্মাণ শুরুর কাজটি দুই বছর থেকে ঝুলে রয়েছে। রেল সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এ বছর বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে। জানা গেছে, ১৮৯৯-১৯০০ সালে তিস্তা নদীর ওপর একটি রেলওয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। এর এক পাশে রংপুরের কাউনিয়া অন্য পাশে লালমনির হাট। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অন্য একটি সেতু থেকে স্প্যান, গার্ডার ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে ১৯৭২ সালে তা মেরামত করা হয়। সেতুটির মেয়াদ ১০০ বছর ধরা হলে ২০০০ সালে সেটি শত বছর পার করেছে। বর্তমানে সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণের ২৪ বছর চলছে। সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোকে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার গতিতে চালাবার কথা। ওই গতিতে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করলে ট্রেন ও যাত্রীদের অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি খেতে হয়। এ ছাড়া মালবাহী ট্রেন সেতুর ওপর উঠলে সেতু ও ট্রেন দুটোই অত্যাধিক কাঁপে। ২০০১ সালে রেল সেতুর পাশে তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরবর্তিতে ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধনের পর তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আর সড়ক সেতু চালু হওয়ার পর মেয়াদোত্তীর্ণ রেল সেতুর যানবাহন চলাচল বন্ধ হলেও রেল সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকে। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫টির মতো ট্রেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে চলাচল করছে। নতুন সেতু নির্মাণ হলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করতে হবে না। রেলের লালমনিরহাট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আহসান হাবিব বলেন, নকশাসহ সব কিছুই চূড়ান্ত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর