রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুর্নীতি কমলে সেবার মান বাড়বে

ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ

দুর্নীতি কমলে সেবার মান বাড়বে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের দুর্নীতি হয় কেনাকাটায়। আরেক ধরনের দুর্নীতি আছে দায়িত্ব পালন না করা। পোস্টিং, ট্রান্সফার, প্রমোশনের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। তাই স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে শুরুতেই কড়া বার্তা দিতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় দুর্নীতি বিভিন্ন পয়েন্টে হয়। ৪২৪টি ফাংশনাল উপজেলায় প্রায় ১ কোটি টাকার কেনাকাটার বাজেট থাকে। ৬২টি জেলা হাসপাতাল ছাড়াও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট হাসপাতালগুলোতেও বড় অঙ্কের কেনাকাটার বাজেট থাকে। বর্তমানে আমাদের ৩২টি অপারেশন প্ল্যান আছে। এই পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশন প্ল্যানগুলোর মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। এ ক্ষেত্রেও কেনাকাটার জায়গাগুলোতে দুর্নীতির সুযোগ আছে। এ ছাড়া নতুন মেডিকেল কলেজ কিংবা হাসপাতাল তৈরি হলে সেখানেও কেনাকাটা আছে। অর্থাৎ দুর্নীতি হতে পারে। স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো দফতর যেমন- হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পিডব্লিউডি, নিমিউ, ইডিসিএল এসব প্রতিষ্ঠানেও দুর্নীতির সুযোগ আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে। আমরা যতটুকু জানি স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৎ লোক। মন্ত্রী সৎ হলে সিস্টেমের মধ্যে যারা আছে তাদের কাছে এমনিতেই একটা বার্তা চলে যায়, যে মন্ত্রী পক্ষপাতিত্ব করবেন না। তাই যারা কেনাকাটায় জড়িত তাদের এখনই জানিয়ে দিতে হবে সৎভাবে কেনাকাটার দায়িত্ব পালন করতে। ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ আরও বলেন, অনেকেরই সরকারি চাকরিতে সঠিক সময়ে না আসা, সেবা দিতে গাফিলতি করার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে। তাই যারা সার্ভিস দিচ্ছে তাদের উৎসাহিত করতে হবে সঠিকভাবে সেবা নিশ্চিত করতে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই ডিভিশন, অধিদফতরগুলোকে নির্দেশ দিতে হবে যে আমরা জনগণকে সেবা দিতে চাই। এ জন্য সবাইকে সহযোগিতামূলক আচরণ করতে হবে। পোস্টিং, ট্রান্সফার, প্রমোশনে দুর্নীতির সুযোগ আছে। এ জায়গাগুলোতে স্বচ্ছ থাকতে হবে। সেবার ক্ষেত্রেও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সরকারি হাসপাতালে রোগী বেশি। তাই রোগীর চাপ কমিয়ে সার্ভিস দেওয়ার জন্য জনবল বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ওয়ার্ডবয়, আয়া, ক্লিনারের সংকট প্রকট। এগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। রেফারেল সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ওষুধ সংরক্ষরণ ও বিতরণের জন্য ডিজিটালাইজড সেবা চালু করতে হবে। তাহলে চিকিৎসা ও ওষুধ সংকটের সমাধান হবে। সরকারিভাবে ডায়াগনেস্টিক সেবার মান ও পরিধি নিশ্চিতের উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে মানুষ গুণগত মানের সেবা পাবে ও পকেট থেকে হওয়া চিকিৎসা ব্যয় কমে আসবে।

 

সর্বশেষ খবর