সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অধিকাংশ উপজেলায় ইভিএমে ভোট

♦ রোজার মধ্যেই তফসিল ঘোষণা ♦ ঈদের পর শুরু হবে নির্বাচনি প্রচার ♦ ভোট ব্যালটে হলে সকালে যাবে কেন্দ্রে

গোলাম রাব্বানী

অধিকাংশ উপজেলায় ইভিএমে ভোট

আসন্ন দুই সিটি নির্বাচনের পাশাপাশি এবার অধিকাংশ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচন কোন কোন উপজেলায় ইভিএমে ভোট হবে তা আগেই ঘোষণা করবে না সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। তবে তফসিল ঘোষণার সময় কোন উপজেলায় ইভিএম এবং কোন উপজেলায় ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ হবে সেই তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, ইসির হাতে এখন দেড় লাখ ইভিএম আছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অকেজো। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬০-৭০ আসনে ব্যবহারের জন্য ইভিএমগুলো প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেনি ইসি। তাই আসন্ন দুই সিটি এবং উপজেলা নির্বাচনে এসব ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। এজন্য কিউসি করবে কমিশন। এরপর কতগুলো ইভিএম ব্যবহার উপযোগী সেই অনুযায়ী কোন ধাপে কত উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার হবে সেই সংখ্যা নির্ধারণ করবে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসির প্রাথমিক চিন্তায় রয়েছে একই জেলায় ইভিএম এবং ব্যালটে ভোট না করার বিষয়টি। যে জেলায় যে ধাপে ইভিএম হবে, সেই জেলায় সব উপজেলায় ইভিএম। আবার যে জেলায় যে ধাপে ব্যালটে ভোট হবে সে ক্ষেত্রে ওই ধাপে ওই জেলায় সব উপজেলায় ব্যালট পেপারে ভোট হবে। এজন্য সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে।

এদিকে ঈদের পরে উপজেলা নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা এবং মার্চে রোজার কথা চিন্তা করে একেবারে ঈদের পরে উপজেলা পরিষদ ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। রোজার শেষ দিকে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আর ঈদের পরপরই এ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারের সময় রেখেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।

এর আগে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচন করার সময়টা চলে এসেছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে। এরপর রোজা। রোজার মধ্যে তো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ঈদের পরপরই যাতে নির্বাচন হয়, সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করব। রোজার শেষ দিকে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তফসিল নিয়ে তিনি বলেন, রোজায় ঈদের কিছুদিন আগে তফসিল ঘোষণা। নির্বাচনি প্রচার এবং নির্বাচন ঈদের পরে হবে। নির্বাচন ব্যালট পেপারে অথবা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আবার ব্যালট ইভিএম দুটির সমন্বয় থাকতে পারে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ১০ মার্চ। পাঁচ ধাপের ওই ভোট শেষ হয় গত জুন মাসে। আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয় প্রথম সভার দিন থেকে। পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করে। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

দলীয় প্রতীক : ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে ভোটের বিষয়টি যুক্ত করা হয়। আর ২০১৭ সালের মার্চে প্রথমবার তিন উপজেলায় দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদ বাদে বাকি দুটি পদ উন্মুক্ত রাখে। এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।  এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি মনে করে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেবে না, সেই সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। সমস্যাও নেই। আইন অনুযায়ী, দুইভাবে মনোনয়ন দেওয়ার নিয়ম আছে। রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন বা স্বতন্ত্র। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে যদি উপজেলা পরিষদে ভোট কর?তে চান চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে, উনি (প্রার্থী) যদি ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে না থাকেন, তাহলে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থন রয়েছে এই মর্মে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আর যদি আগে নির্বাচিত হয়ে থাকেন তাহলে ২৫০ জনের স্বাক্ষর লাগবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর