মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়ে নৌযান চলাচল

অনেক ডুবোচর দুর্ঘটনার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ঝুঁকি নিয়ে নৌযান চলাচল

বরিশাল-ঢাকা নৌপথ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ১৬৫ নটিক্যাল মাইলের এ নৌপথের বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর জেগে ওঠায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী নৌযান। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগী নৌযান মাস্টাররা নিরাপদ নৌ চলাচলের জন্য দ্রুত ডুবোচর অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ নৌপথ সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণের নৌপথের গুরুত্ব কমেছে। তবে এখনো বরিশালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন নৌপথে ঢাকা-দক্ষিণাঞ্চল রুটে চলাচল করে হাজার হাজার যাত্রী। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী বোঝাই করে রাজধানীর উদ্দেশে ছেড়ে যায় অর্ধশতাধিক নৌযান। একইভাবে ঢাকা থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন রুটের উদ্দেশে সমসংখ্যক যাত্রীবাহী নৌযান ছেড়ে আসে। মধ্যরাতে এসব নৌযান নাব্য সংকটে পড়ে।

বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি সুন্দরবন-১৫ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আলমগীর হোসেন আলম জানান, মেঘনার শাখা নদীর হিজলা-বাবুগঞ্জ চ্যানেলে নাব্য কমে গেছে। ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ চ্যানেলে রাতের বেলা পর্যাপ্ত পানি থাকে না। গজারিয়া নদীর বাগরজা থেকে বামনীর চর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে পলি পড়ে ডুবোচর জেগেছে। এ ছাড়া মেহেন্দীগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে হাইমচর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে জেগেছে ডুবোচর। এসব চ্যানেল অতিক্রমের সময় নৌযানের তলা ডুবোচরে ধাক্কা লাগে। এতে নৌযান কাত হয়ে কিংবা তলানি ফেটে দুর্ঘটনায় পড়ার ঝুঁকি থাকে। একই রুটের এমভি পারাবত-১২ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আতিকুল ইসলাম শামীম জানান, হিজলা-বাবুগঞ্জ চ্যানেলের সামনে গ্রিন বয়াবাতির কাছে ডুবোচর রয়েছে। ঢাকায় যেতে-আসতে লঞ্চের তলায় ধাক্কা লাগে। মালবাহী কোস্টার জাহাজ আটকে থাকে। মেঘনার কালীগঞ্জ-মল্লিকপুর টার্নিংয়ে এক বছর আগে একটি কোস্টার জাহাজ ডুবে গেছে। এ কারণে আশপাশে ডুবোচর পড়ছে। কোস্টার জাহাজটি না ওঠানোয় ওই চ্যানেলটি একেবারে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সংকীর্ণ চ্যানেলে ডুবে যাওয়া কোস্টার জাহাজের পাশ ঘেঁষে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীবাহী নৌযান চালাতে হয়। ওই স্থানে যে কোনো মুহূর্তে যাত্রীবাহী নৌযান দুর্ঘটনাকবলিত হতে পারে বলে আশঙ্কা তার। এ ছাড়া বামনীর চরে লাল বয়াবাতির কাছে ডুবোচর পড়ে চ্যানেল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এ রুটের এমভি পারাবত-১১ লঞ্চের সুপারভাইজার নজরুল ইসলাম খান জানান, মধ্যরাতে যখন লঞ্চের তলানি ডুবোচরে ধাক্কা লাগে তখন যাত্রীরা ভয় পায়। অনেক সময় তারা ডাকচিৎকার দেয় এবং লঞ্চ কর্মচারীদের গালাগাল করে। ডুবোচরে লঞ্চের তলা ধাক্কা লাগলে কর্মচারীদের কিছু করার থাকে না। ঝুঁকি নিয়েই গন্তব্যে যেতে হয়। হাজারো যাত্রীর জীবনরক্ষায় নৌপথ নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এ ব্যানারে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের কেন্দ্রীয় দফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, মোংলা-পাকশী-রূপপুর একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ নৌপথ ওই প্রকল্পের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর